নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদুল আজহার ছুটি এখনো চলছে। এর মধ্যেই রাজধানীমুখী মানুষের ফিরতি যাত্রা শুরু হয়েছে অল্প পরিসরে। তারপরও ঢাকা এখনও অনেকটাই ফাঁকা। নগরজীবনে ফেরেনি স্বাভাবিক গতি। বিভিন্ন সড়ক, টার্মিনাল, বাজার, এমনকি জনবহুল এলাকাগুলোতেও নেই সেই চিরচেনা ভিড়। এছাড়া শহরের গণপরিবহনগুলোতে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম, অধিকাংশ বাসেই যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) ঈদের চতুর্থ দিন রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার টার্মিনালগুলোতে দূরপাল্লার বাসগুলো আসছে ঠিকই, কিন্তু যাত্রী কম। যারা ফিরছেন, তারাও মূলত ঈদের ভিড় এড়িয়ে আগেভাগেই রাজধানীতে পৌঁছাতে চাইছেন।
ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতেও ছিল একই চিত্র। ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, মতিঝিল, বাড্ডা, উত্তরা, মিরপুর সব জায়গাতেই ঈদের ছুটির স্পষ্ট প্রভাব রয়েছে। যত্রতত্র গাড়ির সারি নেই, ট্রাফিক সিগন্যালে থেমে থাকার চাপ নেই, পথচারীদের ভিড়ও কম।
ভিআইপি সিটি সার্ভিস বাসের চালক বাবু বলেন, আজ সকাল থেকে রাস্তা ফাঁকা দেখেছি। যানজট তো একেবারেই নেই। ঈদের সময় শুধু এমন খালি রাস্তা দেখা যায়। যাত্রী কম থাকায় তেমন ভাড়াও পাওয়া যায়নি।
খিলক্ষেত বাস স্ট্যান্ডে কথা হয় দুরুল হুদার সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাড়ি থেকে ট্রেনে বিমানবন্দরে নেমে বাসে খিলক্ষেত এলাম, এখানেই বাসা। ঢাকা এখনও ফাঁকাই দেখা যাচ্ছে। বাসে কোনো ভিড় নেই। ট্রেনেও কোনো ভিড় নেই। মানুষজনের ঢাকায় আসতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
তুরাগ বাসের যাত্রী মাহমুদুল হাসান বলেন, আজ সকালেই বোর্ড বাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেই। সাধারণত এই সময়টায় বাসে তিল ধারণের জায়গা থাকত না। কিন্তু আজ চিত্রটা পুরো উল্টো। বাসে উঠে দেখি অনেক সিট খালি, দাঁড়িয়ে থাকারও প্রয়োজন হয়নি। ভালোভাবে বসেই পুরোটা পথ আসতে পেরেছি।
‘যদিও বাসে ভিড় ছিল না, তবে যাত্রীর জন্য প্রতিটি স্টপেজে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। কারণ, রাস্তায় যাত্রী নেই বললেই চলে। যাত্রী তুলতে বাসও অপেক্ষা করছে।’
এদিকে, সরকারি অফিসসহ অনেক বেসরকারি অফিসের কার্যক্রম এখনও বন্ধ রয়েছে। ঈদের ছুটি চলবে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত। অফিস খুলবে ১৫ জুন। ফলে রাজধানীর প্রশাসনিক ও আর্থিক কেন্দ্রগুলো যেমন মতিঝিল, আগারগাঁও বা উত্তরা অফিস পাড়া সব জায়গায় একপ্রকার নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছুটি চলছে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, ১৩ ও ১৪ জুন থেকে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড় বাড়বে এবং ১৫ জুন থেকে ধীরে ধীরে পুরোনো চেহারায় ফিরবে রাজধানী ঢাকা।