নিজস্ব প্রতিবেদক
মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রাজবাড়ীতে দিনেদুপুরে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে ইলিশ শিকার। রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের কালীতলা এলাকায় গিয়ে ইলিশ ধরার এ চিত্র দেখা যায়।
কালিতলা ছাড়াও জৌকুড়া ঘাট থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত পদ্মা নদীর রাজবাড়ীর ৪২ কিলোমিটার অংশেই চলছে এই মাছ শিকার। মাছ শিকার করে নদীর পাশেই বিক্রি করছেন জেলেরা। এ ছাড়াও জেলে ও তাদের লোকজন মাছগুলো জেলা শহরে হোম ডেলিভারি দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালীতলা এলাকায় জেলেরা অবৈধ কারেন্ট জাল ব্যবহার করে নদীতে ইলিশ শিকার করছেন। এ সময় নদীতে অন্যান্য জেলেদেরও মাছ শিকারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় পেশাদার জেলেরা ইলিশ মাছ শিকার থেকে বিরত থাকলেও কিছু অসাধু ও মৌসুমি জেলেরা এ সময় ইলিশ মাছ শিকারে তৎপর হন। এ ছাড়াও নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন পাশের জেলা পাবনা থেকে জেলেরা এসে রাজবাড়ী অংশে ঢুকে তারা পদ্মায় মাছ শিকার করে থাকেন। পদ্মা নদীর রাজবাড়ী মৎস্য বিভাগের আওতাধীন ৪২ কিলোমিটার অংশের সব জায়গায় অভিযান চালানো সম্ভব না হওয়ায় জেলেরা সেই সুযোগে মাছ শিকার করছেন। মৎস্য বিভাগ সদর উপজেলা পদ্মা নদীর অংশে অভিযান চালালে জেলেরা গোয়ালন্দ উপজেলার অংশে জাল ফালায়। আবার গোয়ালন্দ অংশে অভিযান চালালে তারা সদর উপজেলার অংশে মাছ শিকার করেন।
রাজবাড়ী গোদার বাজার পদ্মা নদী এলাকার স্থানীয় কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, আমরা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা মানলেও কিছু অসাধু ও মৌসুমি জেলেরা এই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। তারা নদীতে জাল ঠিকই ফালাচ্ছে। এ ছাড়াও পাবনা জেলার কিছু জেলে ও চরের কিছু জেলেরা এসে পদ্মায় জাল ফেলে মাছ শিকার করছে। এইসব জেলেরা অভিযানের কোনো তোয়াক্কা করছে না। মৎস্য বিভাগের উচিত অভিযানের টিম সংখ্যা বাড়ানো। রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দে অংশে একাধিক টিম কাজ করলে জেলেরা কিছুটা হলেও আতঙ্কিত হবে।
এদিকে মৎস্য বিভাগ বলছে, তাদের অভিযান চলমান আছে। এই অভিযানে কোনো ত্রুটি নেই। তারা তাদের সাধ্যমতো নদীতে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছে। নিয়মিত কারেন্ট জাল জব্দ, জেলেদের কারাদণ্ড, জরিমানা করা হচ্ছে ও জব্দকৃত মাছ এতিমখানায় দান করে দিচ্ছে। মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি নেই বলে তারা দাবি করেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অ.দা.) ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইলিশ আমাদের দেশের জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদকে রক্ষা করার জন্য আমরা আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি। নিয়মিত জেল-জরিমানাসহ জাল পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজ (রোববার) অন্তরমোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করাকালীন আমাদের দুই কর্মকর্তার ওপর হামলা হয়েছে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ইলিশ রক্ষায় অভিযান চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও অভিযানে সহায়তা করছে।