নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী:
পুলিশি রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী। তিন দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) তাকে রাজশাহী মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
নগরীর বেয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন বলেন, রিমান্ড শেষে সকালে তাকে আদালতে তোলা হয়। পরে আদালত জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওসি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য তার কি না তা নিশ্চিত হতে পরীক্ষার জন্য নমুনা ভয়েস সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মেয়র আব্বাস আলী পুলিশকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। তদন্তের সার্থে এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি ওসি।
গত ২২ নভেম্বর রাতে মেয়র আব্বাস আলীর ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বানালে ‘পাপ হবে’ এমন কথা বলতে শোনা যায় তাকে। ওই ঘটনায় গত ২৩ নভেম্বর রাতে মেয়রের বিরুদ্ধে আরএমপির তিন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এর মধ্যে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় দায়ের করা নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল মোমিনের অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়।
ওই দিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। কিন্তু রিমান্ড শুনানি না করে আদালত ওই দিন তাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন। শুনানি শেষে গত ৬ ডিসেম্বর তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ম্যুরাল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে গত ২৪ নভেম্বর পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে মেয়র আব্বাসকে অপসারণ করে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ। এর দুদিন পর ২৬ নভেম্বর তাকে জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেয় রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ।
মেয়র আব্বাস আলী কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরেও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন।
বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জেরে গত ২৫ নভেম্বর রাতে পৌরসভার ১২ কাউন্সিলর তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। সুনির্দিষ্ট মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় এবার মেয়র পদও হারাতে পারেন আব্বাস আলী।
বিএসডি/এসএফ