খেলাধূলা প্রতিনিধি:
১ বলে প্রয়োজন ছিল ৫। মুজারাবানি এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হন। উৎসবে মাতে বাংলাদেশ। দুই দল উঠেও যায়। কিন্তু না, নুরুল হাসান সোহান স্টাম্পের আগেই বল ধরায় হয় নো বল! ফ্রি হিট পায় জিম্বাবুয়ে। এবার বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি মুজারাবানি। শ্বাসরুদ্ধকর, রোমাঞ্চকর ও নাটকীয়তায় বাংলাদেশ জয় পায় ৩ রানে।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬। বোলিংয়ে আসেন আগের তিন ওভারে ২৭ দেওয়া মোসাদ্দেক হোসেন। দ্বিতীয় বলে ইভান্স ফেরেন বাউন্ডারি লাইনে। তৃতীয় বলে লেগ বাই থেকে চারের পর ক্রিজে এসে এনগারাভা ছয় হাঁকিয়ে আরও সহজ করে দেন। পরের বলেই স্টাম্পিং তিনি। নাটকে ভরা শেষ ওভারে শেষ পর্যন্ত হাঁফ ছেড়ে বাঁচে বাংলাদেশ। r
গ্যাবায় টস জিতে রোববার বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৫০ রান করে। রান তাড়ায় নেমে জিম্বাবুয়ে ৮ উইকেটে ১৪৭ রান করে। সুপার টুয়েলেভে নেদারল্যান্ডসের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় পেলো বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেলো তারা। শেষ দুই ম্যাচে ভারত ও পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে সেমিফাইনালের টিকিট পাওয়ার আশায়।
জিম্বাবুয়ের উইকেটের মিছিলে শুরুর দিকে জয় সহজ মনে হলেও উইলিয়ামস-বার্ল ম্যাচটাকে নিয়ে আসেন শেষের দিকে। বাড়তে থাকে নাটক। শেষ দুই ওভারে স্পিন হওয়াতে বাড়তে থাকে আরও শঙ্কা। দুর্দান্ত বোলিং করতে থাকা মোস্তাফিজুর রহমান-তাসকিন আহমেদদের আগেই বোলিং করিয়ে ফেলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ১৮তম ওভারের শেষ দুই বলে হাসান মাহমুদকে দুই চারে শন উইলিয়ামস ব্যবধান কমিয়ে আনেন। ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন সাকিব। দুর্দান্ত থ্রোতে রানআউট করেন উইলিয়ামসকে। তার ব্যাট থেকে আসে ৪২ বলে ৬৪ রান।
পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট নিলেও বাধা হয়ে দাঁড়ান শন উইলিয়ামস। রেগিস চাকাভাকে নিয়ে প্রথমে দলের হাল ধরেন। তবে বেশিদূর এগোতে দেননি তাসকিন। চাকাভাকে ফিরিয়ে ভেঙে দেন ৩৪ রানের জুটি। এরপর রায়ান বার্লকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে থাকেন তিনি। দুজনের ফিফটির জুটি পূর্ণ করেন ৩৯ বলে। জুটি থেকে আসে ৪৩ বলে ৬৩ রান। উইলিয়ামসের রান আউটে মূলত ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। বার্ল অপরাজিত ছিলেন ২৫ বলে ২৭ রানে।
অথচ বল হাতে শুরুটা দুর্দান্ত এনে দেন তাসকিন। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ওয়েসলি মাধেভেরেকে ফেরান ইনিংসের তৃতীয় বলেই। পরের ওভারে আবার আরভিনকে ফেরান ৮ রানে। প্রথম দুই ম্যচে উইকেট শূন্য থাকা মোস্তাফিজ পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এসেই ফেরান মিল্টন শুমবা (৮) ও দারুণ ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজাকে (০)। পাওয়ার প্লেতে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে চেপে ধরে বাংলাদেশ। কিন্তু মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে ম্যাচ কঠিন করে তোলেন উইলিয়ামস।
তাসকিন ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে তাসকিনের হাতে। মোস্তাফিজ মাত্র ১৫ রান দিয়ে নে ২ উইকেট। ৩৪ রান দিয়েন মোসাদ্দেক নেন ২ উইকেট। এ ছাড়া সাকিব ৩৪ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য।
ব্যাট হাতে টেনে নিয়ে গেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। যদিও সেট হওয়ার পর হাত খুলতে দেরি করে ফেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দেখা পান ৪৫ বলে। ফিফটির পর ১০ বলে করেন ২১ রান। তার ৫৫ বলে ৭১ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭টি চার ও ১টি ছয়ে।
সাকিব থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। উইলিয়ামস মারতে গিয়ে আউট হন ২০ বলে ২৩ রান করে। সৌম্য সরকার (০) ও লিটন দাস (১৪) দ্রুত ফেরার পর শান্তর সঙ্গে জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন সাকিব। সাকিব আউট হলে ভাঙে ৪৪ বলে ৫৪ রানের জুটি।
সাকিবের আউটের পর আফিফ এলে জ্বলে ওঠেন শান্তও। দুজনের জুটি থেকে আসে ২১ বলে ৩৬ রান। ১৯ বলে ২৯ রান করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হন আফিফ। তার শেষ চার ওভারে বাংলাদেশ নিতে পারে মাত্র ৩০ রান। আফিফ এক পাশে স্ট্রাইক রোটেট ও বাউন্ডারি হাঁকালেও অন্য প্রান্ত ছিল অচল। মোসাদ্দেক হোসেন শেষে এসে ১০ বলে করেন ৭ রান। এখানে পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ। নুরুল হাসান সোহান ১ বলে ১ রান করে রানআউট হন।
বিএসডি/এফএ