বর্তমান সময় ডেস্ক:
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় রূপপুর প্রকল্পের বাস্তবায়ন অনেকটাই এগিয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা। ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে ৯১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা-পরবর্তী অনিশ্চয়তা নিয়ে গত মঙ্গলবার রাশিয়ার পরমাণু শক্তি করপোরেশন রোসাটম অবশ্য বলেছে, রূপপুরের কাজে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না।
রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। এরপর পশ্চিমারা নানামুখী নিষেধাজ্ঞা জারি শুরু করে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গতকাল শুক্রবার আর কোনো নিষেধাজ্ঞা না দিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাশিয়ায় প্রায় ৪৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ৬৬ কোটি ডলারে, প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩৭ শতাংশ। রপ্তানি বেশি হয় পোশাক। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাশিয়ার কাছ থেকে ৪৮ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গমের বড় উৎস রাশিয়া। দেশটি থেকে ভুট্টাও আসে।
জানতে চাইলে খাদ্যশস্য আমদানিকারক চট্টগ্রামের বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বর্তমান সময়কে বলেন, রাশিয়া থেকে ৯০ শতাংশ পণ্য আনা হয় সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের বিক্রেতাদের মাধ্যমে। ওই বিক্রেতারা এখন রাশিয়ার পণ্যের বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দিচ্ছে না।
বিশ্বের ২০০টির বেশি দেশের ১১ হাজার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুইফটের সঙ্গে যুক্ত। সুইফটের মাধ্যমে পুরো বিশ্বের ৯০ শতাংশ লেনদেন সম্পন্ন হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর বিকল্প লেনদেন মাধ্যম গড়ে তোলা কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। সুইফটের বিকল্প হিসেবে চীনা মুদ্রায় ব্যবসা করা যায়। তবে ওই ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বিশ্বের বড় ব্যাংকগুলোর সম্পর্ক নেই। আবার চীনা মুদ্রায় ব্যবসা করতে গেলে তা-ও পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে। ফলে ঝুঁকি আছেই। নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে লেনদেন করাও বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে সেটাও নির্ভর করছে সময় ও পরিস্থিতির ওপর।
সেলিম রায়হান আরও বলেন, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমারা পরবর্তী সময়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়, সেটাও দেখতে হবে। সামনে একের পর এক ধাক্কা আসবে। এখন আর এসব উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। এ জন্য নীতি-কৌশলে আরও সুসংহত হতে হবে।
বিএসডি/ এফএস