আন্তর্জাতিক ডেস্ক
লকডাউন অমান্য করে নিজ সরকারি বাসভবনে পার্টি আয়োজনের অভিযোগে বিরোধীরা যখন তার পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন, সে সময়েই দেড় বছর আগের সেই ‘ভুলের’ জন্য ক্ষমা চাইলেন যুক্তরাজ্যের প্রধামন্ত্রী বরিস জনসন।
বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট ভবনে এ সম্পর্কে বিবর্ণমুখে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত আচরণের কারণে জনগণ যে আমার নেতৃত্বধীন সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন- তা আমি অনুভব করতে পারছি।’
‘এবং এই ক্ষোভ স্বাভাবিক। কারণ, যাদের কাজ আইন প্রণয়ন করা- তারাই যদি আইনভঙ্গ করেন, তাহলে তা মেনে নেওয়া কষ্টকর।’
‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি পার্টিতে ছিলাম মাত্র ২৫ মিনিট। ৬ টার দিকে আমি সেখানে গিয়েছিলাম, অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছিলাম, তারপর ৬ টা ২৫ মিনিটে অফিসে এসে কাজে যোগ দিয়েছি।’
দেড় বছর আগে, ২০২০ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যে যখন করোনার প্রথম ঢেউ চলছে, সে সময় বেশ কয়েকজন অতিথির জন্য লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে নিজের সরকারি বাসভবন পার্টির আয়োজন করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্যের প্রথম লকডাউনের মধ্যে আয়োজিত সেই পার্টিতে শতাধিক অতিথি আমন্ত্রিত ছিলেন এবং সবাইকে যার যার মদ আনার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
পার্টিতে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইমেইলের মাধ্যমে। সেই ইমেইলটি সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে এবং তা থেকে জানা গেছে ২০২০ সালের ২০ মে আয়োজন করা হয়েছিল সেই গার্ডেন পার্টির।
ওই সময় লকডাউন চলছিল যুক্তরাজ্যে। এ কারণে যে কোনো প্রকার সমাবেশ ও জনসমাগম ওই সময় কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল দেশটিতে।
বিবিসি, স্কাইনিউজসহ ব্রিটেনের প্রায় সবগুলো প্রথম সারির দৈনিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছে এই সংবাদ। ফলে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি বরিস জনসনের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।
২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়া বরিস জনসন বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে উপস্থিত হওয়ার পর তাকে নিয়ে রীতিমত বিদ্রুপ শুরু করেন বিরোধী আইন প্রণেতারা।
পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পরই তাকে উদ্দেশ্য করে পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা কেয়ার স্টার্মার বলেন, ‘পার্টি কিন্তু শেষ, সম্মানিত প্রধানমন্ত্রী।’
‘এটি খুবই দুঃখজনক যে মাসের পর মাস প্রতারণা ও ছলচাতুরির পর কেউ একজন পথভ্রষ্ট হলো, হাস্যকার একটি পার্টির আয়োজন করল এবং ব্রিটেনের জনগণের সামনে আইনভঙ্গের নজির স্থাপন করল।’
সূত্র: রয়টার্স
বিএসডি/এসএ