লাইফস্টাইল ডেস্ক:
লবণ আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি শরীরে স্বাভাবিক ফ্লুইড ব্যালান্স বজায় রাখে। নার্ভ ও পেশির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে লবণের অবদান অনেক।
ঘাম ও মূত্রের মাধ্যমে বাড়তি লবণ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই আমাদের প্রতিদিন লবণ খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে একজন ব্যক্তি দিনে ৫ গ্রাম লবণ খেতে পারবেন। এর বেশি লবণ শরীরে প্রবেশ করলে হতে পারে নানা সমস্যা।
বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে লবণের সঙ্গে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের ভালো-মন্দের যোগ রয়েছে। আসুন জেনে নিই বাড়তি লবণের ক্ষতিকারক দিকগুলো।
রক্তচাপ বাড়ে
অতিরিক্ত লবণ খেলে ব্লাডপ্রেশার বাড়তে শুরু করে। এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা দেখা দেয়। লবণের মাত্রা রক্তে যত বাড়ে, তত পটাশিয়ামের পরিমাণ কমতে শুরু করে। যে কারণে ব্লাড ভেসেলের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। যে কারণে রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে।
স্ট্রোকের ঝুঁকি দেখা দেয়
মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ কমতে শুরু করলে মস্তিষ্কের ভেতরে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। ফলে ধীরে ধীরে ব্রেন সেলগুলো মরতে থাকে। এমনটি হলে স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা বাড়ে। এখন প্রশ্ন হলো– মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ বন্ধ হয় কেন? আসলে শরীরে লবণের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে রক্তচাপ বাড়তে থাকে। আর রক্তচাপ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ে। আর একবার যদি ছোট ছোট স্ট্রোক হতে শুরু করে, তা হলে ব্রেনে রক্তের সরবরাহ কমতে শুরু করে।
হার্টের ক্ষতি হয়
হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়বে না কমবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে রক্তচাপের ওপর। ব্লাডপ্রেশার যদি বাড়তে থাকে, তা হলে হার্টের ওপর চাপ বাড়তে শুরু করে। এমনটি হলে করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বাড়ে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও। আসলে রক্তচাপ বাড়তে থাকলে হার্টে ঠিকমতো অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছাতে পারে না। ফলে ধীরে ধীরে হার্টের পেশিরা শক্ত হতে শুরু করে। যে কারণে হার্টের কর্মক্ষমতা কমে যায় এবং হার্ট অ্যাটাক হয়।
পাকস্থলী ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে
দেহে লবণের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে নানা কারণে শরীরে হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামক একটি জীবাণুর মাত্রাও বাড়ে। এরা দেহের ভেতরে প্রদাহের মাত্রা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে পাকস্থলীর মারাত্মক ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে শরীরের এই অংশে ক্যানসার কোষ জন্ম নেয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
অস্টিওপোরোসিস দেখা দেয়
শরীরে লবণের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে হাড়ের ক্ষমতা কমতে থাকে। কারণ হাড়ের মূল উপাদান হলো ক্যালসিয়াম। সেটা কমলে হাড় তো দুর্বল হবেই।
ওজন বৃদ্ধি পায়
শরীরে লবণের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে তৃষ্ণা বেড়ে যায়। আজকের প্রজন্ম তৃষ্ণা মেটাতে পানির পরিবর্তে ঠান্ডা কিছু খেতে ভালোবাসে। ফলে কোলড্রিংক খাওয়ার পরিমাণ বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে শরীরে ক্যালোরি প্রবেশের মাত্রাও। ফলে ওজন বাড়তে সময় লাগে না।
বিএসডি / আইকে