নিষ্প্রাণ ড্রতেই শেষ হলো ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের লর্ডস টেস্ট। পঞ্চম দিনের মধ্যাহ্নবিরতির পর ইংল্যান্ডকে ২৭৩ রানের লক্ষ্য দিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড। জিততে হলে ৭৫ ওভারে ২৭৩ রান করতে হতো।
কিন্তু দুই ইংলিশ ওপেনার ররি বার্নস ও ডম সিবলির ব্যাটিং দেখে মনে হয়নি ইংল্যান্ড জেতার জন্য খেলছে। বরং দিনের বাকি সময়টা পার করে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ার চেষ্টা ছিল স্বাগতিকদের। শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো। ইংল্যান্ড দিন শেষে করে ৭০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭০ রান করে, ড্র হয় ম্যাচ।
আজ সকালে ২ উইকেটে ৬২ রানে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৬৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড।
আগের দিন নিউজিল্যান্ডের প্রথম দুই উইকেট নেওয়া ওলি রবিনসন আজও দিনের শুরুটা করেন নাইটওয়াচম্যান নিল ওয়াগনারের উইকেট নিয়ে। পরে মার্ক উড, স্টুয়ার্ট ব্রড ও অধিনায়ক জো রুট যোগ দেন উইকেট শিকারে।
মধ্যাহ্নবিরতির আগে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার পর আর ব্যাটিংয়ে নামেনি নিউজিল্যান্ড। আগের ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ওপেনার বার্নস ও ডম সিবলিকে সামলাতে হয় কিউই পেসারদের অতিরিক্ত সিম, সুইং ও স্পিন।
শুরুতে রান করা সহজ ছিল না ব্যাটসম্যানদের জন্য। দুজনের ৪৯ রানের জুটি গড়তে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। প্রথম স্পেলে কাইল জেমিসন, টিম সাউদি ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে কোনো উইকেট দেননি দুই ইংলিশ ওপেনার। বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের অতিরিক্ত টার্ন ও বাউন্স থেকেও রক্ষা পেয়েছেন দুজন।
কিন্তু নিল ওয়াগনার বোলিংয়ে এসে ঠিকই জুটি ভাঙেন। দারুণ আউটসুইংয়ে স্লিপে ক্যাচ বানান বার্নসকে (২৫)। এরপর ৭ রানের মধ্যে আবার উইকেট নিউজিল্যান্ডের! আউটসুইংয়ে আউট হন ইংল্যান্ডের হয়ে তিনে নামা জ্যাক ক্রলিও। সাউদির বলে ঠিক প্রথম ইনিংসের মতো গালিতে ক্যাচ দেন তিনি।
দ্রুত দুই উইকেট হারালে অধিনায়ক জো রুট হাল ধরেন। সঙ্গী হিসেবে রুট পেয়েছেন ওপেনার সিবলিকে, যাঁর পছন্দই টানা ব্যাটিং করে যাওয়া। দুজন মিলে গড়েন ৮০ রানের ম্যাচ বাঁচানো জুটি। রুট ৪০ রানে ওয়াগনারের বলে এলবিডব্লু হলেও বাকি পথটা সিবলি পাড়ি দেন ওলি পোপকে নিয়ে। ২০৭ বল খেলে সিবলি অপরাজিত থাকেন ৬০ রানে। পোপের ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ২০ রান।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে অভিষিক্ত ডেভন কনওয়ের ডাবল সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে করে ৩৭৮ রান। ইংল্যান্ডের অভিষিক্ত পেসার রবিনসন ৪ উইকেট নেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ফাস্ট বোলার মার্ক উড। ইংল্যান্ডও তাদের প্রথম ইনিংসে লড়েছে ওপেনার বার্নসের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির সাহায্যে। বাকি ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেননি ৬ উইকেট পাওয়া পেসার সাউদির সুইংয়ে।
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ২৭৫ রানে অলআউট হলে ১০৩ রানের লিড পায় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু উইলিয়ামসনদের দুর্ভাগ্য, টেস্টের তৃতীয় দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় এগিয়ে থাকার সুবিধাটা নিতে পারেনি সফরকারীরা।