আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস। ভয়াবহ দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ জনে। প্রাণহানির সংখ্যাটি নিশ্চিত করেছে লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্টির চিকিৎসা পর্যবেক্ষকরা।
তারা বলেছেন, হতাহতদের ঘটনার তদন্ত চলছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি মেডিকেল এক্সামিনার বা করোনারের কার্যালয় দাবানলে নিহতদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে তালিকায় নিহতদের বিস্তারিত পরিচয় বা বিবরণ দেওয়া হয়নি।
নথিতে বলা হয়েছে, দাবানলে নিহতের মধ্যে প্যালিসেডস ফায়ার জোনে ৫ জন এবং ইটন ফায়ার জোনে ১১ জনকে পাওয়া গেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এর আগে নিহতের সংখ্যা ছিল ১১ জন ছিল। নিহতদের মরদেহ খুঁজে পেতে কুকুরের মাধ্যমে তল্লাশি চালানোয় এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। এছাড়া নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য পেতে কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই একটি তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
এদিকে সম্ভাব্য শক্তিশালী বাতাস ফিরে আসার আগে ছড়িয়ে পড়া দাবানল নিয়ন্ত্রণে প্রাণপন চেষ্টা করে দমকলকর্মীরা। কারণ এই বাতাস বিশ্বখ্যাত জে পল গেটি জাদুঘর এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি লস অ্যাঞ্জেলেসের দিকে দাবানলের আগুনকে ছড়িয়ে দিতে পারে।
অন্যদিকে নতুন করে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জারি করা সতর্কতা বাড়ির মালিকদের আরও বিপদে ফেলেছে।
এছাড়া পাহাড়ের ঢাল ঘন ধোঁয়ায় আছন্ন হওয়ায় মাটিতে থাকা দমকলকর্মীরা ফুসে ওঠা আগুনকে নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পাইপ ব্যবহার করছেন। এক ব্রিফিংয়ে ক্যালফায়ার অপারেশনের প্রধান ক্রিশ্চিয়ান লিটজ বলেন, ইউসিএলএ ক্যাম্পাসের অদূরে গিরিখাত এলাকায় জ্বলতে থাকা আগুন নিয়ন্ত্রণের দিকেই মূল ফোকাস থাকবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার সান্টা মনিকা ও মালিবুর মধ্যবর্তী অন্তত ১ হাজার ২৬২ একর ভূমিতে দাবানলে জ্বলতে শুরু করে। শুকনো আবহাওয়ায় প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার অবকাঠামো পুড়ে গেছে।
দাবানলের ভয়াবহতায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গৃহহীন হচ্ছেন হলিউড তারকারাও। ক্যালিফোর্নিয়ার নানা এলাকা থেকে ইতোমধ্যেই লক্ষাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। জরুরি অবস্থা জারি করে চলছে আগুন নেভানোর চেষ্টা।
কিন্তু আগুন নেভাতে গিয়ে বিপদে পড়ছেন দমকলকর্মীরাও। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ছে।