রকমারি ডেস্ক,
লাইলি-মজনুর প্রেম কাহিনী সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা আছে। শেক্সপিয়ারের রোমিও-জুলিয়েট বিশ্বে যতটা বিখ্যাত, উপমহাদেশে লাইলি-মজনুর কাহিনী হয়তো তারও বেশি নামকরা! এই অমর প্রেম কাহিনী পরিচিত আমির পুত্র আর বণিক কন্যার প্রেম বিরহ নিয়ে। জানেন কি, তাদের স্মৃতি বিজড়িত একটি পাহাড় আছে। সেটি কোথায়? পাহাড়টি সৌদি আরবের দাম্মাম শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
প্রতিদিন সেখানে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। বিশ্ব ইতিহাসের এই নন্দিত প্রেম কাহিনির স্মৃতি বিজড়িত পাহাড়টি এক নজর দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমায় সেখানে। সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ দাম্মাম থেকে ২৩০ কিলোমিটার দূরে আল আহসা শহর। কাতার এবং দুবাই সংলগ্ন সীমান্তবর্তী ওই এলাকাটিতে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেজুর বাগান আছে। আর সেখানেই লাইলি মজনুর প্রেম ও বিরহের স্মৃতি বিজড়িত পাহাড়টি অবস্থিত।
এই পাহাড়টি লাইলি মজনুর প্রেমের পাহাড় বলেই সবার কাছে পরিচিত। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে দর্শনীয় এ স্থানটি। প্রতিদিনই বিভিন্ন দেশের দর্শনার্থীর ভিড় জমান সেখানে। বিশেষ করে বৃহস্পতি ও শুক্রবারে ঈদের ছুটির মতো উৎসুক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে এই লাইলি মজনুর পাহাড়ে। বিশাল এই পাহাড়ের প্রবেশ মুখে তৈরি করা হয়েছে রির্সোট মিউজিয়াম, গাড়ি পার্কিংসহ নানা ধরনের দোকানপাট।
৫০ সৌদি রিয়াল (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১,১২০ টাকা) দিয়ে টিকেট কেটে ভেতরে প্রবেশ করে মিউজিয়াম শেষেই দেখতে পাবেন এক দরজা। সেটি খুললেই পাহাড়ের প্রবেশপথ। এই পাহাড়ের ভেতর ঢুকতেই প্রবেশমুখে দেখতে পাবেন ম্যাপ। যা দেখে দর্শনার্থীরা পাহাড়ের ভিতরের প্রতিটি রাস্তা খুব সহজেই বের করতে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। যখনই পাহাড়ে ঢুকবেন, খেয়াল রাখবেন সন্ধ্যা হওয়ার আগেই যেন বের হতে পারেন। কারণ সন্ধ্যা হতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় পাহাড়ে ঢোকার প্রবেশ পথ।
এর কিছু দূরে গেলেই দেখতে পাবেন, নির্জন পাহাড়ি এলাকার মাঝে সুন্দর একটি চিড়িয়াখানা। সেখানে আছে বাঘ, সিংহ, হরিণ, গাঁধা, শিয়াল, বানরসহ নানা প্রজাতির বন্য প্রাণী। সেখানকার প্রবেশ মূল্য ১০ রিয়াল যা (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২২০ টাকা)। চিড়িয়াখানা থেকে কিছু দূরেই আছে হুপ হুপ নামক প্রবাসী বাংলাদেশিদের মার্কেট। প্রতিদিন বিকেলে সেখানে বসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মিলন মেলা।
আমির পুত্র কয়েস বাল্যকালে বণিক কন্যা লাইলির প্রেমে পড়েন। লাইলির প্রেমে পড়ে একসময় মজনু বা পাগল হয়ে যান আমির পুত্র কায়েস। লাইলিও মজনুর প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করতেন। তবে তাদের প্রেম বিরহে রুপ নেয়। এ কারণে মজনু পাগল হয়ে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে থাকেন। অন্যদিকে লাইলির অন্যত্র বিয়ে হলেও মজনুকে ভুলতে পারেননি। তাদের দীর্ঘ বিরহ জীবনের অবসান ঘটে দু’জনের করুন মৃত্যুর মাধ্যমে।
বিএসডি/এএ