আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
এদিকে রাশিয়ার বেলগরদ শহরে কয়েকটি বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শহরটির মেয়র ভায়াসচেভ গ্লাডকভ। অবশ্য বিস্ফোরণের কারণ জানানো হয়নি। গ্লাডকভ বলেছেন, বিস্ফোরণে কয়েক ডজন আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত থেকে বেলগরদের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেন বেলগরদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা তিনটি ইউক্রেনীয় টোচকা-ইউ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বস্ত করে দেয়, যেগুলোর মাথায় ক্লাস্টার বোমা ছিল। এই ধ্বংসাবশেষ একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের ওপর পড়লে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ক থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের হঠানোই এখন এই যুদ্ধে রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য। পুরো লুহানস্ক নিয়ন্ত্রণের পর এখন রুশ সেনারা দোনেৎস্কের দিকে নজর দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইউরিভ সাক বলেছেন রাশিয়া লুহানস্ক দখলে নিতে পারলেও দনবাসের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি।
ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ বলছে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের অনেক বড় শহর এখনো ইউক্রেনীয় সেনাদের নিয়ন্ত্রণে। এসব শহরে গত দু–তিন দিন ধরে প্রচণ্ড রকম ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেট হামলা হচ্ছে, কিন্তু দনবাসের যুদ্ধ এখনো বাকি। ইউক্রেন যথেষ্ট পরিমাণে ভারী কামান এবং অন্যান্য অস্ত্র পেতে চলেছে এবং তখন হারানো এসব অঞ্চল মুক্ত করতে সমর্থ হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। ইতিমধ্যে মারিউপোল ও সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা এসেছে মস্কোর পক্ষ থেকে। এরপর তাদের বড় লক্ষ্য ছিল এই লিসিচানস্ক শহরটি।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে অবশ্য পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে ভারী অস্ত্র পাওয়ার অপেক্ষা ফোরাচ্ছে। আল-জাজিরা জানায়, রুশ হামলা শুরুর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অর্থ ও অস্ত্রসহায়তা দিয়ে আসছে। এবার ইউক্রেনকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা, রাডারসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম দেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। নতুন করে এ সহায়তা চলমান যুদ্ধের গতি বদলাতে ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ে সহায়ক হবে বলে মত বিশ্লেষকদের।
ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেনকে প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সামরিক সহায়তা নিয়ে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক ও ইউরোপের দেশগুলো।
বিএসডি/ফয়সাল