নিজস্ব প্রতিবেদক
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী শকুনের বিকল্প নেই। শকুন সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। কিন্তু শকুনসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সরকারের একার পক্ষে কষ্টসাধ্য। তাই প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত ব্যক্তি, বিজ্ঞানীদের শকুন রক্ষার জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে একনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সরকার শকুন সংরক্ষণকারী ব্যক্তি ও সংস্থাকে সরকারি স্বীকৃতি ও প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেবে।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস উপলক্ষে বন অধিদফতর আয়োজিত ওয়েবিনারে ঢাকায় সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শকুন সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ বছর জানুয়ারি মাসে সরকার শকুনের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ কিটোপ্রোফেন নিষিদ্ধ করেছে, যা বাংলা শকুন রক্ষায় বিশ্বব্যাপী একটি উদাহরণ। অন্যান্য ক্ষতিকর ওষুধ যেমন ফ্লুনিক্সিন, এসিক্লোফেনাক যেন আমাদের দেশের বাজারে না আসে সে ব্যাপারেও মন্ত্রিপরিষদ নির্দেশনা দিয়েছে। শকুনের জন্য নিরাপদ ওষুধ মেলোক্সিক্যাম রোগাক্রান্ত পশুদের জন্য ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ২০১০ সালে দেশব্যাপী শকুনের জন্য ক্ষতিকারক ওষুধ ডাইক্লোফেনাক নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে আমরা যে মাইলফলক অর্জন করেছি তা বিশ্ব সংরক্ষণ সম্প্রদায়ের কাছেও একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
শকুন সংরক্ষণে ‘বাংলাদেশ জাতীয় শকুন সংরক্ষণ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। ২০১৪ সালে দেশের দু’টি অঞ্চলকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৫ সালে শকুনের প্রজননকালীন সময়ে বাড়তি খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ও সুন্দরবনে দু’টি ফিডিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
বনমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে প্রণীত দশ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ শকুন সংরক্ষণ কর্মপরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার দিয়েই শকুন সংরক্ষণে বর্তমানে সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৬ সালে অসুস্থ ও আহত শকুনদের উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দিনাজপুরের সিংড়ায় একটি শকুন উদ্ধার ও পরির্চযা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার. সচিব মো. মোস্তফা কামাল এবং অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন।
এছাড়াও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এনাম উল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিদ মজুমদার বাবু, বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের সভাপতি ড. এস এম ইকবাল, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার এর বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রকিবুল আমিন এবং বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সার্কেলের বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিম অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইইউসিএন এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার এবিএম সরোয়ার আলম।
বিএসডি/এমএম