বিনোদন ডেস্ক:
শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে ২০২১ সালে একুশে পদকপ্রাপ্তদের সম্মানিত করেছে নাটকের দল মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়। সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ১১ দিনের ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব ২০২১’-এর সমাপনী আনুষ্ঠানিকতায় তাদের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- চলচ্চিত্রে সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী, অভিনয়ে সালমা বেগম সুজাতা ও রাইসুল ইসলাম আসাদ, নাটকে আহমেদ ইকবাল হায়দার, আবৃত্তিতে ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, আলোকচিত্রে পাভেল রহমান, সংগীতে পাপিয়া সারোয়ার এবং ভাষা ও সাহিত্যে কবি কাজী রোজী।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উত্তরীয় পরিয়ে ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করে তাদের সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।
তিনি এ সময় বলেন, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় এ দেশের সংস্কৃতি জগতে অতিপ্রিয় একটি জাগরণমূলক নাম। দেশের সংস্কৃতির প্রতি যেসব মানুষ ও প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে, দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় তাদের সম্মাননা জানিয়েছে। এটি অনেক বড় একটি বিষয়। আগামীতে এই উৎসব আরো বড় পরিসরে হবে- এই আশা রাখছি। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এমন উৎসবই আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে। এই দলের মতো আরো কয়েকটি দল যদি এভাবে এগিয়ে আসে, তাহলে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।
উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সায়লা ফারজানা, রোটারিয়ান এ কে এম আখতারুজ্জামান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো. জাকেরুল আবেদীন, কাস্টম ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার ড. মো. তাজুল ইসলাম, জনতা ব্যাংকের উপ মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব’-এর প্রধান সমন্বয়ক মীর জাহিদ হাসান।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সম্মাননা জানানো শেষে মঞ্চায়িত হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে থিয়েটার প্রযোজনা ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ নাটকটি।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী-কে স্মরণীয় ও প্রাঞ্জল করতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের আয়োজনে ১১ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন ও পরীক্ষণ থিয়েটার হলে এই উৎসবের নাটকগুলো মঞ্চায়ন করা হচ্ছে। এর আগে গত ০৩ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় নন্দনমঞ্চে উৎসব উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও স্বাধীন বাংলাদেশের সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় অসামান্য ভূমিকা রাখা ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সংস্কৃতিজন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মাননীয় মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।
এ ছাড়া বাংলাদেশের ৫০ বছরে সংস্কৃতিচর্চা, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত গবেষণা ও প্রসারে ভূমিকা রেখে চলেছে, এমন ৯টি প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসবের অংশ হিসেবে সম্মাননা প্রদান করছে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সিরাজগঞ্জ উত্তরণ মহিলা সংস্থা, থিয়েটার পত্রিকা, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ছায়ানট, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, কেন্দ্রীয় কঁচি-কাচার মেলা, পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ থিয়েটার আর্কাইভস।
এই পুরো উৎসবে মঞ্চায়িত হচ্ছে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ১৪টি নাট্যদলের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মঞ্চ সফল নান্দনিক নাটক।
বিএসডি/জেজে