নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব ও বিএনপি নেত্রী অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়কে গত তিন মাস ধরে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রেখে তার ছোট্ট মেয়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা বিশাল অমানবিক রাজনীতি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
নজরুল বলেন, ‘আমরা জানি, নিপুণ রায় চৌধুরীর একটা ছোট মেয়ে আছে। সেই মেয়ের কাছ থেকে তার মাকে দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন করে রাখা-এটা খুব বিশাল অমানবিক রাজনীতি। তাকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে। আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, নিপুণ রায় চৌধুরীর মতো নেত্রীদেরকে গ্রেপ্তার করে, অসংখ্য নেতাকর্মী গুম করা হয়েছে, এসব করার পরেও শহীদ জিয়ার আর্দশের সৈনিকেরা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কর্মীরা, তারেক রহমানের ভাই এবং বোনেরা ভয় পায় নাই, ভয় পায় না। বিএনপি ভাঙেও নাই, বিএনপির দুর্বলও হয় নাই। কাজেই নিপুণ রায়কে গ্রেপ্তার করে রেখে বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে-এটা ভাবার কোনো কারণ নাই।’
আজ মঙ্গলবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বাংলাদেশ নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে সংগঠনটির সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর মুক্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নিপুণ রায়ের প্রতি যে অন্যায় তারা (সরকার) করেছে আমরা তার প্রতিবিধান চাই। আমি চাই, তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। সরকার তার রাজনৈতিক স্বার্থে না হয় অপরাধ করেছে। আমরা আশা করবো, আদালত পবিত্র স্থান। সেখানে অন্তত সে সুবিচার পাবে।’
সংগঠনের সদস্য মীর সরাফত আলী সপুর সভাপতিত্বে ও আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, উনাকে কেউ প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দেয় নাই, এ দেশের লাখো কোটি মানুষের ভালোবাসায় শিক্ত হয়ে কোটি কোটি ভোটের ব্যবধানে তিনি এদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। আজকে সেই প্রধানমন্ত্রী অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ধুকে ধুকে মরছেন। উনার সুচিকিৎসা হচ্ছে না। আমরা উনার চিকিৎসার কথা বলেছি, আমরা বিদেশে নেওয়ার কথা বলেছি- আমরা অনুরোধ করেছি। কিন্তু চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা চিকিৎসা করতে দেবে না। আমরা আজকেও এ সভা থেকে বলতে চাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে আসার সুযোগ দিন এবং নিপুণ রায় চৌধুরীকে মুক্তি দিন।’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমার বার বার একটা কথা মনে হয়, এদেশ সম্ভবত আওয়ামী লীগ চালাচ্ছে না। একটা পুতুল সরকার এদেশে বসা আছে। তারাই চালাচ্ছে। কারও নির্দেশ মতো কোনো গোষ্ঠি, কোনো প্রতিষ্ঠান, কোনো সংস্থা কিংবা সবাই একত্রিতভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের গা বাঁচানোর জন্য এই আওয়ামী লীগ নামক পুতুলটিকে টিকিয়ে রেখেছে। এমন কোনো সংস্থা নাই, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নাই, এমন কোনো ব্যক্তি নাই যারা চুরি-ডাকাতি-লুট করে নাই। হাজার হাজার কোটি টাকা তারা বিদেশে পাঁচার করে দিয়েছে। পি কে দত্তের মতো বহু বেসরকারি এবং সরকারি কর্মচারিরা বাংলাদেশের টাকা লুট করেছে। তারা দেশে অবস্থান করছে আর তাদের সন্তান-সন্তাতিরা বিদেশে অবস্থান করছে। আমি বলতে চাই ওদেরও বিচার হবে। এতো খুন, এতো লুট, এতো গুম-এরও বিচার হবে। যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকে তাদেও (লুটপাটকারী) বিচার হবে। সেই সমস্ত বিচারের ভয় আজকে একটা গোষ্ঠি এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপি নেতা শিরিন সুলতানা, আজিজুল বারী হেলাল, আফরোজা আব্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, খন্দকার আবু আশফাক, বিলকিস ইসলাম, ফরিদা ইয়াসমীন, আবদুর রহিম, আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।