নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।
এম এম আখতারুজ্জামান রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। ছাত্রত্ব শেষ করে চিকিৎসক হওয়ার পরও রাজনীতি ছাড়েননি। তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সদস্য হন। বর্তমানে তিনি স্বাচিপের কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজকল্যাণ সম্পাদক।
এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—
প্রথম আলো
ছাত্রলীগ হলেই পেতেন স্বাস্থ্যের বড় পদ
স্বাচিপ বা ছাত্রলীগের কর্মী বা নেতা হওয়ার ফলে এম এম আখতারুজ্জামান একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকটি পদ দখল করে আছেন। তিনি রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সহকারী পরিচালক। পাশাপাশি এ বছরের ৫ মে তাঁকে অধিদপ্তরের চারটি কর্মসূচির ব্যবস্থাপক করা হয়েছিল। এগুলো হচ্ছে ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি। অর্থাৎ পাঁচটি পৃথক পদ তিনি একা দখল করে ছিলেন। গত সপ্তাহে এম এম আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি বর্তমানে দুটি কর্মসূচি দেখেন।
কালবেলা
সচিবের এতিমখানায় বরাদ্দ হয় ‘৮০ ভূতের’ নামে
মো. খায়রুল আলম সেখ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান গত বছরের অক্টোবরে। সচিব হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই নিজ গ্রাম ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন এতিমখানা। নাম ‘পশ্চিম চরবর্ণী নরীরন্নেসা এতিমখানা ও মাদ্রাসা’। মাদ্রাসাটির সরকারি অনুমোদন পায় চলতি বছরের মে মাসে। তবে নিজের প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠার পরপরই অর্থ বরাদ্দ নেন সচিব। এমনকি ওই সময় একজন এতিমও সেখানে পড়াশোনা করতেন না। বর্তমানে ওই মাদ্রাসায় একজনও এতিম নেই। যদিও ৮০ জন এতিমের পড়াশোনা এবং থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা বাবদ সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এতিমখানায় বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় এক ব্যক্তি রসিকতা করে বলেছেন, ‘এখানে একজনও এতিম নেই। ওই ৮০ জন মনে হয় ভূত।’
শুধু এতিমখানায়ই নয়, সচিব হওয়ার দুই মাসের মধ্যেই বাবার নামে ‘আয়েন উদ্দিন সেখ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’-এর নিবন্ধন নেন খায়রুল আলম। এরপর সেখানেও বরাদ্দ দেওয়া হয় সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে।
কালের কণ্ঠ
স্মার্ট মিটারে জালিয়াতিও স্মার্ট
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। টেন্ডার জালিয়াতির মাধ্যমে বাজারদামের চেয়ে বাড়তি দামে কেনা হয়েছে চার লাখ ৯০ হাজার মিটার। এই জালিয়াতচক্রের সামনে ছিলেন ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তিন সংসদ সদস্য (এমপি)।
এ ছাড়া এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তাঁর এক বন্ধু এবং সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
বণিক বার্তা
এলএনজি আমদানি নীতির সুযোগ লুফে নেয় বিশেষ গোষ্ঠী
দেশে গ্যাস সংকট নিরসনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ‘গ্যাস সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান-২০১৭’ তৈরি করেছিল। যেখানে মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে ২০৪১ সাল পর্যন্ত এলএনজি আমদানিকেই মোটাদাগে প্রাধান্য দেয়া হয়। আর এ নীতিকে লুফে নেয় দেশী-বিদেশী বিশেষ কয়েকটি কোম্পানি।
২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমদানি করা হয়েছে অন্তত দেড় লাখ কোটি টাকার এলএনজি। এসব প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার পেছনে মোটা অংকের কমিশন বাণিজ্য হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মানবজমিন
হাসপাতালে এখনো কাতরাচ্ছে আহতরা
এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতরা। বিভিন্ন হাসপাতালে গুরুতর আহতদের এখনো চিকিৎসা চলছে। তাদের অনেকের অঙ্গহানি হয়েছে। কেউ হাত হারিয়েছে। কেউ পা। কারও চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে বুলেট। এমন আহতদের নিয়ে দুঃসহ সময় পার করছেন স্বজনরা। সরকারের নির্দেশনায় বিনা খরচে তাদের চিকিৎসা চললেও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পরিবার।
আন্দোলনে যারা আহত হয়েছে তাদের বড় অংশই চিকিৎসা নিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জাতীয় অর্থোপেডিকস হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল)। গতকাল এই দুটি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, অনেক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আবার অনেকেই সাধারণ বেডে ও আইসিইউতে চিকিৎসা নিচ্ছে। অনেকের অবস্থা গুরুতর। তারা বাঁচার লড়াই করছে। আন্দোলনে আহত হওয়ার কারণে চিকিৎসকরা তাদেরকে আলাদাভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।
সমকাল
বছর বছর সম্পদের হিসাব দিতে হবে কড়ায়-গণ্ডায়
এতদিন পাঁচ বছর পরপর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার রীতি ছিল। তবে সেটাও মানতে অনুৎসাহ দেশের প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর। এখন থেকে বছর বছর হিসাব দিতে হবে কড়ায়-গণ্ডায়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে ব্যর্থ হলে কিংবা কোনো ভুল তথ্য দিলে, কিছু গোপন করলে বা সম্পদের কোনো রকম অসংগতি দেখা গেলে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সম্পদের তথ্য নিলেও তা কোনোভাবে প্রকাশ করবে না সরকার। এ ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইনেও জানা যাবে না কারোর সম্পদের হিসাব।
প্রথম আলো
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে চাপা পড়েছে শিল্পকলার দুর্নীতি
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জন্য টাকার অঙ্কে বরাদ্দ গত ১৫ বছরে বেড়েছে ১০ গুণ। প্রতিষ্ঠানটির জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেট ১০০ কোটি টাকার বেশি। কয়েক বছর ধরেই বছরব্যাপী বিপুল ব্যয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন কর্মশালা ও অনুষ্ঠান।
দেশজুড়ে হয়েছে নাটক ও যাত্রাপালার আয়োজন। এসবের আড়ালে বারবার চাপা পড়েছে সোয়া দুই শ কোটি টাকার হিসাবের গরমিল, নিয়োগে অনিয়ম আর সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বহুমুখী স্বেচ্ছাচারিতার খবর। বরাদ্দের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিতে বেড়েছে দুর্নীতির পরিমাণও। এখন সেসব সংকটে জর্জরিত বাংলাদেশে সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
যুগান্তর
জাকিরের আলাদিনের চেরাগ ‘মন্ত্রিত্ব’
সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। গত ১৫ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ২ হাজার ৮০০ গুণ। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। এরপর হু হু করে বাড়তে থাকে তার সম্পদ। ‘আলাদিনের চেরাগ’ হাতে পাওয়ার মতো জিরো থেকে হিরো বনে যান জাকির হোসেন। স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, ভাইবোন, শ্যালক-শ্যালিকা এমনকি অন্য আত্মীয়স্বজনদেরও কপাল খুলে যায়। বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, জমিদখল, হাট-বাজার ইজারা নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, মাদক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ, থানায় মামলা নিয়ন্ত্রণ, হামলা মামলা এবং সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ সবই হয় ‘মন্ত্রীর’ নামে।
রাতের আঁধারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে জমি দখল করে গড়ে তোলেন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ঢাকা, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও জামালপুরসহ বিভিন্ন জেলায় রয়েছে তার বাড়ি, জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। জামালপুরের বকশিগঞ্জে ৬০ বিঘা জমি দখল করে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘মায়ের মাজার’।
এছাড়া ক্যাম্পাসে প্রাণের উচ্ছ্বাস; নেত্রকোনায় করেন ছাত্রদল ঢাকায় তিনি ছাত্রলীগ; অবরোধে জনজীবন ব্যাহত পাহাড়ে; শিল্পাঞ্চলে এবার বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।