নিজস্ব প্রতিবেদক
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নে ছেলেকে নির্মমভাবে হারানো এক অসহায় মা শনিবার (১৪ জুলাই) সকালে সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে দাবি জানালেন ন্যায়বিচারের। এ সময় তার আর্তনাদে মুহূর্তেই ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। সড়ক অবরোধ করে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের সামনে তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার বুকের মানিককে যারা কেড়ে নিয়েছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই। আমি যেন বেঁচে থাকতে সেই ফাঁসি দেখতে পারি।
এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘিরে শিয়ালকোল ইউনিয়নের বহুতী গ্রামের হাজারো মানুষ জড়ো হন। সকাল ১০টা থেকে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া মহাসড়কের চারা বটতলা এলাকায় তারা মানববন্ধন শুরু করেন, পরে তা রূপ নেয় সড়ক অবরোধে। এতে উভয়পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল বিচারের দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার। তাদের চোখেমুখে ছিল ক্ষোভ, কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল ন্যায়বিচারের দাবি।
নিহত ফরিদুল ইসলাম বাদশার মা ফরিদা বেগম বলেন, আজ ৮-১০ দিন ধরে আমাদের ঘরে ভাত রান্না হয় না। পেটে ভাত নেই, গলায় পানি নামে না। ছেলে ছাড়া সবকিছু অন্ধকার। আমি শুধু বিচার চাই।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ঈদের আগের রাতে (৬ জুন) পারিবারিক বিরোধের জেরে বাদশাকে তার ফুফাতো বোনের স্বামী মনিরুল ইসলাম মনি কৌশলে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।
এই ঘটনায় বাদশার মা সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মনিরুলসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা হলেও পুলিশ প্রশাসন সঠিকভাবে তদন্ত না করায় মানববন্ধন করে পুরো এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ জানান, এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না। যদি দ্রুত বিচার না হয়, তাহলে আগামী দিনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে তারা হুঁশিয়ারি দেন।
একজন মায়ের কান্নায় ভেঙে পড়া গ্রামের মানুষের হৃদয়ে শুধু শোক নয়, জেগে উঠেছে ক্ষোভও। যা না থামা পর্যন্ত থামবে না এই আন্দোলন। সার্বিক বিষয়ে এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান এর মুঠোফোনে ফোন করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।