নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বাজারে আনা হলো ১০টি গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ ‘ফর্টিফাইড আটা’।
গত বৃহস্পতিবার ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টস লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (GAIN)-এর কারিগরি সহায়তায় দ্য ওয়েস্টিন ঢাকায় একটি জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এর উদ্বোধন করা হয়।
খাদ্যে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা অনুপুষ্টি বিশেষত জিংক, আয়োডিন, ভিটামিন এ, ও ফোলেটের ঘাটতি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্বব্যাপী ২ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ স্থূলতা, ওজনাধিক্য এবং কম ওজন ইত্যাদি অপুষ্টিজনিত স্বাস্থ্য সমস্যার শিকার। অপুষ্টির কারণে একটি জাতির বছরে প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে এবং ৩-১৬% পর্যন্ত জিডিপি হ্রাস ঘটাতে পারে। NMS: ২০১৯-২০ এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশে, প্রায় ৭০% নন-প্রেগনেন্ট নন-ল্যাটেটিং (NPNL) নারীদের দুই বা ততোধিক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ঘাটতি রয়েছে এবং ২৪% নারীর যেকোনো একটি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি রয়েছে। BDHS, ২০২২ এর তথ্যমতে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ২৪% খর্বকায়, ১১% কৃশকায় এবং ২২% কম ওজন দেখা যায়।
ফর্টিফাইড ফুড মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন না করেই তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে। এছাড়া এতে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, পাশাপাশি এটি রোগ প্রতিরোধ, উপার্জন বৃদ্ধি এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতি ১ মার্কিন ডলার বিনিয়োগে ২৭ ডলার অর্থনৈতিক মুনাফা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশে আটা-ময়দা ফর্টিফিকেশনের বিদ্যমান স্ট্যান্ডার্ডটি ১০টি প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট দ্বারা সমৃদ্ধ, যেমন বি৬, বি১২, ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, নিয়াসিন, রিবোফ্লাভিন, থিয়ামিন, ভিটামিন এ এবং জিংক। এগুলো সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো মোকাবিলার জন্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে। ফর্টিফাইড আটা-ময়দা হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি, প্রতিরোধ ক্ষমতা, রক্তস্বল্পতা ও জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ এবং শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ নিশ্চিত করতে সহায়ক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআইর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) জনাব এস এম ফেরদৌস আলম, ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টসের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব তানভীর আহমেদ, ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব রিয়াজুল এইচ চৌধুরী এবং গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কতিপয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা; ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতাল, বারডেম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টসের সিও জনাব মাহবুব বাসেত এবং গেইনের পোর্টফোলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান। এরপর গেইন-এর প্রোজেক্ট ম্যানেজার জনাব আবুল বাশার চৌধুরী ‘বাংলাদেশে খাদ্য ফর্টিফিকেশন’ বিষয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন।