আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০২৫ সালে রাশিয়া আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাবে বলে আশা করছেন ভৌগলিকভাবে বিশ্বের বৃহত্তম এই দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জনগণের উদ্দেশে দেওয়া এক শুভেচ্ছাবার্তায় এ আশা জানিয়েছেন তিনি।
নতুন বছরের আগমন উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টায় জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভাষণ দেন পুতিন। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সেই ভাষণে পুতিন বলেন, “আর এই সময়ে, যখন নতুন একটি বছর দুয়ারে কড়া নাড়ছে, আমরা একটি উজ্জল ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছি। আমাদের মনে এই আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে সব ঠিক হয়ে যাবে; আমরা শুধু সামনের দিকে এগোব। কারণ আমরা জানি যে রাশিয়ার ভাগ্য এবং এখানকার নাগরিকদের সুখ-সমৃদ্ধির মধ্যেই আমাদের সবার অস্তিত্ব নিহিত।”
এমন এক সময়ে এই ভাষণ দিলেন পুতিন, যখন মূল্যস্ফীতির চাপে নাভিশ্বাস উঠছে রাশিয়ার জনগণের। সরকারি তথ্য অনুসারে, ডিসেম্বরে রাশিয়ার মূল্যস্ফীতি পৌঁছেছে ২১ শতাংশে। ফলে খাদ্য ও নিত্য ব্যবহার্য অন্যান্য দ্রব্যের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে।
সাড়ে তিন মিনিট দৈর্ঘ্যের সেই ভাষণে পুতিন অবশ্য দেশের বর্তমান এই মূল্যস্ফীতি ইস্যুতে সরাসরি কিছু বলেননি, অর্থনৈতিক কোনো সংস্কারের প্রতিশ্রুতিও দেননি; তবে রাশিয়া যে বর্তমানে চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছে, তা স্বীকার করেছেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “এ মুহূর্তে রাশিয়া একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। অতীতেও বহুবার চ্যালেঞ্জ এসেছে এবং সেসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছে রাশিয়া; আর রাশিয়া যখন কোনো চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে, তখন ইতিহাস তৈরি হয়। ২০০০ সাল থেকে ২০২৫— একবিংশ শতাব্দির এক চতুর্থাংশ ইতোমধ্যে আমরা পেরিয়েছি। এই পথ সহজ ছিল না। প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমাদের এগোতে হয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদ্বির করায় ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। যদি যুদ্ধবিরতি না ঘটে, তাহলে চলতি বছর ৩ বছর পূর্ণ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত সপ্তাহে বলেছিলেন যে তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি সংলাপ শুরু করতে আগ্রহী, তবে তার আগে দেশটিতে নির্বাচন হতে হবে এবং বৈধ সরকারকে ক্ষমতাসীন হতে হবে।
ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি ২০১৭ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তার সাংবিধানিক মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০২৩ সালের আগস্টে। সামরিক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এখনও ক্ষমতায় রয়েছেন তিনি।
সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড