জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল (বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল) প্রায় আট বছর ধরে তৈরি করা হয়। অথচ উদ্বোধনের মাত্র দুই বছরের মধ্যেই নানান সমস্যায় জর্জরিত। ইতোমধ্যে বাথরুমের ছিটকানি জনিত সমস্যায় আটকে পড়েছিলেন এক ছাত্রী। প্রায় আধা ঘন্টা যাবত সাহায্যের আবেদন করেও শেষে নিজেকেই নিজে উদ্ধার করেন সেই ছাত্রী।
শনিবার (২১শে আগস্ট) ছাত্রী হলের ৩য় তলার ৫ম বাথরুমে কাজী ফারজানা নামের এক ছাত্রী ছিটকানি জনিত সমস্যার কারণে প্রায় আধা ঘন্টা যাবত ভিতরে আটকে পড়েন। তার চিৎকার চেচামেচিতে আশপাশের কয়েকজন ছাত্রী এগিয়ে আসেন। তারা এসে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উদ্ধারের জন্যে ফোন করলেও তারা এগিয়ে আসেনি। পরবর্তীতে ধাক্কাধাক্কি করে সেই ছাত্রী নিজেই গেট খুলতে সমর্থ্য হন এবং ভিতর থেকে বেরিয়ে আসেন।
আটকে পড়া কাজী ফারজানা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী। তিনি জানান,’আমি প্রায় আধাঘন্টা ধরে আটকে ছিলাম। তাদেরকে ফোন করা হয়েছিল। অথচ তারা কেউই একটা বার আসলো না। কয়েকজন ছাত্রী এসে আমাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা বাইরে থেকে কতটুকুই বা আর করতে পারে। শেষে ধাক্কা ধাক্কি , টানাটানির মাধ্যমে ছিটকানি খুলতে পারি এবং বেরিয়ে আসি। তারা পরে এসেও একটাবার খোঁজ নেয়নি।’
তবে এই ঘটনা নতুন নয়। এই ব্যাপারে আটকে পড়া ছাত্রী তার ফেসবুকে পোস্ট করলে ইতোপূর্বে আরো অনেক ছাত্রীর এভাবে ভিতরে আটকে পড়ার তথ্য সামনে আসতে থাকে। পাশাপাশি উঠে আসতে থাকে হলের বিভিন্ন সমস্যা।
হলের ছাত্রীদের অভিযোগ অনুসারে প্রায় বেশিরভাগ বাথরুমেরই ছিটকানি ভাঙ্গা। অনেক গুলো বাথরুমের টাইলস ভাঙ্গা, নেই কাপড়ের স্ট্যান্ড। সেই ভাঙ্গা স্থানে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের বাস রয়েছে। ফলে তারা রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। বাথরুমগুলো নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয় না। অনেক গুলোর আবার লাইট ও নষ্ট। সমস্যা সমাধানের অভিযোগ করেও পাননি সমাধান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী জানান,’হলের সমস্যা বলে শেষ করা যাবে না। সমস্যা গুলো জানালে তিনি (হলের প্রভোস্ট) সমাধান করার আশ্বাস দেন কিন্তু পুরোপুরি সমাধান হয়না। কিছু সমস্যার সাময়িক সমাধান করলেও, সেগুলো পুনরায় বড় সমস্যা আকারে সামনে আসে। কতবার অভিযোগ জানানো যায়। আমরা নিজেরাও এখন বিরক্ত হয়ে গেছি। এখনতো জানাতেও ইচ্ছা করে না।’
বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম বলেন,’বাথরুমে আটকে পড়েছে,এই ধরনের কোনো তথ্য এখনও আমার কাছে আসেনি। আমি গতকাল রাতের ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ছাত্রীদের সহায়তায় সেখানে উপস্থিত ছিলাম।আমাকে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তারপরও আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো। হলের কনস্ট্রাকশন যারা করেছে তারা কম দামী জিনিস লাগিয়েছে। আমি প্রায় ৬০টা এর মত ছিটকানি লাগিয়েছি। যে সব বাথরুমে ছিটকানি সমস্যা ছাত্রীরা আমাকে এসে বললে দ্রুত ঠিক করে দিবো।’
উল্লেখ্য, অন্য সমস্যাগুলোর ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তিনি ব্যাস্ততা প্রকাশ করেন। তবে তিনি ছাত্রীদের অভিযোগকৃত সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।
বিএসডি/ এমআর