বর্তমান সময় ডেস্ক
যুব মহিলা লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিনকে চার বিষয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কার্যালয়ের পাশের নতুন ভবনে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে এক নোটিশে জানানো হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গঠনতন্ত্রের (১১-খ) ধারা মোতাবেক শাখা সংগঠনসমূহের সভাপতির দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে তিনি কার্যনির্বাহী কমিটি এবং ঊর্ধ্বতন সর্বস্তরে জবাবদিহি করবেন। গঠনতন্ত্রের (১২-খ) ধারায় সভাপতির গণতান্ত্রিক ক্ষমতা ও দায়িত্ব মোতাবেক আপনার সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা বা কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সম্পাদকমণ্ডলী ও সহযোগী সংগঠনের যৌথ সকলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গঠনতন্ত্রের সিরিয়াল অনুসারে সহযোগী সংগঠনগুলো ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে জাতির পিতা প্রতিকৃতিতে পুষ্পমালা অর্পণ করবে। কিন্তু আপনি কখনোই কোনো সাংগঠনিক নিয়মকানুন মেনে চলেন না। সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যনির্বাহী সদস্য উপস্থিত থাকার পরও প্রত্যেক জাতীয় কর্মসূচিতে মহানগর উত্তরের নামের আগে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং দীর্ঘক্ষণ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনের জায়গা বেদখল করে দাঁড়িয়ে থাকেন। ফলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। যার কারণে প্রায়ই আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। যা নেতিবাচক কর্মকাণ্ড হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে।
(১) গত ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ মহান বিজয় দিবস উদযাপন এবং শ্রদ্ধা নিবেদনের পূর্বে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের জাতিরজনক শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ড করেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাজমা আক্তারসহ অনেককে অপমান, নাজেহাল এমনকি শারীরিকভাবে আহত ও লাঞ্ছিত করেছেন। জাতির পিতার রক্তের স্মৃতি বিজড়িত ওই ৩২ নম্বর বাড়ি আমাদের পবিত্র স্থান, আমাদের আবেগ, অনুভূতির জায়গা। সুবর্ণজয়ন্তীর একটি ঐতিহাসিক দিনে আপনার ও আপনার কর্মীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির অনেককে চোখের জল নিয়ে বাড়ি ফিরতে হলো! এর প্রকৃত এবং গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেবেন।
(২) আপনি ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই থেকে দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছরেও কোনো থানা ও ওয়ার্ডে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মেলন করে কমিটি গঠন করেন নাই। এরফলে দলীয় কর্মীরা পদ এবং অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। সাংগঠনিক নিয়ম মেনে আপনার দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত না করার ফলে দল সংগঠিত হচ্ছে না; অথচ আপনি পদ আঁকড়ে আছেন। এর সুনির্দিষ্ট এবং যথাযুক্ত ব্যাখ্যা দেবেন।
(৩) নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক পাপিয়া আপনার দীর্ঘদিনের পারিবারিক বন্ধু। তার অপকর্মের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে গড়া সংগঠন যুব মহিলা লীগ দেশে বিদেশে অনেক সমালোচনার মুখে পরে। আপনার বিরুদ্ধে পাপিয়াকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আছে। এর প্রকৃত যোগ করুন।
(৪) আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, নাজমা আক্তার ১/১১ সময় আপনাকে কোর্ট ও সাবজেলে যেতে নিষেধ করেছিল। নাজমা আক্তার জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে অংশ না নিয়ে পালিয়ে বেরিয়েছেন। আপনার এই বক্তব্যের উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে নির্দেশনা দেওয়া হলো।
এমতাবস্থায়, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার ব্যাখ্যাসহ আপনার লিখিত জবাব আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে যুব মহিলা লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রেরণ করার নির্দেশ দেওয়া হলো এবং একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপনাকে যুব মহিলা লীগের সকল কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো।
এসএ