নিজস্ব প্রতিবেদক
অর্ধ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোখলেসুর রহমান ও তার স্ত্রী শরীফা বেগমের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে থেকে ওই চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই আদালতে উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ওই চার্জশিট দাখিল করবেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, আসামি মো. মোখলেসুর রহমান ও তার স্ত্রী শরীফা বেগমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর পৃথক সম্পদ বিবরণী নোটিশ ইস্যু করা হয়। এরপর ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর তারা দুদক সচিব বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এরপর তাদের সম্পদ বিবরণী যাচাই-বাছাই কাজ শুরু করা হয়। আসামি শরীফা বেগম (মনি) তার দাখিল করা সম্পদের বিবরণীতে কক্সবাজারের সায়মন বিচ রিসোর্ট লিমিটেডে ৪৭৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ঢাকার শান্তিনগরে ২ হাজার ৩৫৪ বর্গফুটের শেলটেক রহমান ভিলায় একটি ফ্ল্যাট, নেত্রকোনা সদরে দুটি দলিলে ২৯ শতক জমি, ঢাকার বাড্ডায় ২ দশমিক ৫ কাঠার প্লট, বাড্ডায় রাজউকের ১ দশমিক ২৫ কাঠার প্লটের বর্ণনা দেন।
সম্পদ-বিবরণীতে তিনি ওইসব সম্পদের মূল্য মোট এক কোটি ৩৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকার ঘোষণা দেন। এছাড়া দাখিল করা সম্পদ-বিবরণীতে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বিজয়নগর শাখায় ৬০ লাখ টাকা, ওয়ান ব্যাংকের গুলশান শাখায় পাঁচ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত, ২১ লাখ টাকার একটি গাড়ি এবং ব্যাংকে ও হাতে নগদসহ মোট এক কোটি ২১ লাখ ৬১ হাজার ৬২ টাকার অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দেন। স্থাবর ও অস্থাবর মিলে দুই কোটি ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার ৬২ টাকার ঘোষণা দিলেও দালিলিক হিসাবে যার বাস্তবিক মূল্য পাওয়া যায় ৩ কোটি ৭ লাখ ৯ হাজার ৮০৬ টাকা।
প্রতিবেদন সূত্রে আরও জানা যায়, অনুসন্ধান-পর্যায়ে আসামি শরীফা বেগম (মনি) ব্যবসা সংক্রান্ত ট্রেড লাইসেন্স, কোনো গোডাউন, শো-রুম, দোকান বা অফিস, মালামাল ক্রয় ও বিক্রির পক্ষে গ্রহণযোগ্য রেকর্ডপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি। একজন গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও মো. মোখলেসুর রহমান কর্তৃক অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদকে বৈধ করার চেষ্টা করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। যা ‘অপচেষ্টা’ হিসেবে দেখছে দুদক।
এছাড়া ৫১ লাখ ১৫ হাজার ৭৪৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২), ২৭ (১) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।