নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়নে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দারিদ্র্য কমাতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা সহায়ক হচ্ছে। বর্তমানে সামাজিক সুরক্ষার সঠিক ব্যবহারে দেশের দারিদ্র্যের হার ৩৬ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
‘বাংলাদেশ সোশ্যাল প্রটেকশন পাবলিক এক্সপেন্ডিচার রিভিউ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে সামাজিক সুরক্ষার প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়।
এছাড়াও প্রকল্পের পরিকল্পনা, নকশা, প্রোগ্রামিং এবং ডেলিভারিসহ বিদ্যমান কাঠামোতে কীভাবে উন্নতি করতে পারে তাও তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো মূলত গ্রামাঞ্চল কেন্দ্রিক। কিন্তু শহরে জনসংখ্যার প্রায় ৫ জনের মধ্যে একজন দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। এরমধ্যে অর্ধেক পরিবার দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্য গ্রামীণ এবং শহুরে এলাকার মধ্যে ভৌগলিক বরাদ্দ পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন।
শহুরে এলাকায় ১৯ শতাংশ দরিদ্র জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ সামাজিক সুরক্ষার আওতায় রয়েছে। গ্রামীণ অঞ্চলে ২৬ শতাংশ দরিদ্র থাকলেও ৩৬ শতাংশ মানুষ এই কর্মসূচির আওতায় এসেছে। অর্থাৎ অনেক স্বাবলম্বীরাও এই কর্মসূচির আওতায় আসছে।
বাংলাদেশ ও ভুটানের বিশ্বব্যাংকের অপারেশন ম্যানেজার ডানডান চেন বলেন, গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়েছে। বর্তমানে দেশের প্রতি ১০টি পরিবারের মধ্যে তিনটি সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় এসেছে। করোনা মহামারি আরও শক্তিশালী, দক্ষ এবং অভিযোজিত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাকে জোরালো করেছে। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া, ভালোভাবে লক্ষ্যযুক্ত এবং কম খণ্ডিত সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি যা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, শ্রম বাজারের দুর্বলতা এবং ঘন ঘন ধাক্কা দেশকে দারিদ্র্য হ্রাসের সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২০ অর্থবছরে, জিডিপির প্রায় ২.৬ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় করেছে বাংলাদেশ। যা একই ধরনের আয়ের স্তরের দেশগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। দেশে প্রতি আটজন দরিদ্র ব্যক্তির মধ্যে একজন ছোট শিশু। তবুও দরিদ্র ছোট শিশুরা সামাজিক সুরক্ষা ব্যয়ের মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ পায়। ব্যয়গুলো আরও কার্যকর হবে যদি বরাদ্দগুলো বিভিন্ন বিভাগে দরিদ্রদের ভাগের সঙ্গে এবং প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচির সঙ্গে সংযুক্ত থাকে।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং প্রতিবেদনের সহ-লেখক অ্যালাইন কৌদুয়েল বলেন, শৈশব থেকে বিনিয়োগ, একটি শিশুকে শুধু স্বাস্থ্যবানই করে না বরং প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে আরও স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করে।
বিএসডি/এমএম