নিজস্ব প্রতিনিধি,
সিরিজে ১-১ সমতা। হারারেতে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিটি বলতে গেলে অঘোষিত ফাইনাল। এমন এক ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ১৯৪ রানের বড় লক্ষ্য ছুড়ে দেয় জিম্বাবুয়ে।পরিসংখ্যান বলছিল, এর চেয়ে অনেক বড় রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও আছে টাইগারদের। সেটা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। নিদাহাস ট্রফিতে।২০১৮ সালের ১০ মার্চ প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার নিদাহাস ট্রফির ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ২১৪ রান টপকে ম্যাচের ২ বল আগে ৫ উইকেটের স্মরণীয় জয় পায় বাংলাদেশ।ব্যাটসম্যারদের দায়িত্বশীল বেটিং এর ফলে টি-টুয়েন্টির সিরিজ জয়ের আজকের এই অঘোষিত ফাইনালে ৫ উইকেটে পেল বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী চেহারায় হাজির হয় জিম্বাবুয়ে। দুই ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানি আর ওয়েসলে মাদভেরে প্রথম তিন ওভারে তোলেন ২৮ রান।তবে দড়ির বাইরে যাওয়ার আগে দারুণ বুদ্ধিমত্তায় বলটি ওপরে তুলে দেন তিনি, পাশেই দাঁড়ানো শামীম কয়েক পা দৌড়ে গিয়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন। তাতেই চাকাভাকে সাজঘরে ফেরানো গেছে। ২২ বলে ৬ ছক্কায় ৪৮ রান করেন তিনি।
সৌম্য সেই ওভারেই তুলে নিয়েছেন আরও এক উইকেট। জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে বোল্ড করেছেন রানের খাতা খোলার আগেই।এগারতম ওভারে জোড়া উইকেট হারিয়ে রানের গতি কমে যায় জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পরের ৪ ওভারে তারা তুলতে পারে মাত্র ২৪ রান।
সেই চাপ থেকেই সাকিবের করা ১৬তম ওভারের প্রথম বলটি রিভার্স সুইপ করেছিলেন মাদভেরে। ৩৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৫৪ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যানের ক্যাচটি থার্ডম্যানে সহজেই তালুবন্দী করেন শরিফুল। ওই ওভারে আসে মাত্র ৩ রান।
পরের ওভারে শরিফুল দেন ৭। কিন্তু ১৮তম ওভারে আবারও রান বিলিয়ে বসেন সাইফউদ্দিন। তিন চার আর এক ছক্কায় তার ওভার থেকে ১৯ রান তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে।১৯তম ওভারে দারুণ বোলিং করেন শরিফুল। প্রথম বলেই শরিফুল ফেরান মায়ার্সকে (২০ বলে ২৩)। পুল করতে গিয়ে বাতাসে বল ভাসিয়ে দেন এই ব্যাটসম্যান। সবমিলিয়ে ওই ওভারে শরিফুলের খরচ মাত্র ২ রান।শেষ ওভারে সাইফউদ্দিন আবার ১৪ দিয়ে বসেন। টানা দুই বলে চার আর ছক্কা হাঁকান রায়ান বার্ল। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ৩১ রানে।বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন পার্টটাইমার সৌম্য সরকার। ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। শরিফুল ইসলাম ৪ ওভারে ২৭ আর সাকিব সমান ওভারে ২৪ রান দিয়ে নেন একটি করে উইকেট। সাইফউদ্দিন এক উইকেট পেলেও দিয়েছেন ৫০ রান।
দারুণ রান তাড়া
উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হলেও ১৯৪ রান তাড়া সহজ নয় কখনোই। সৌম্যর ফিফটি ও সম্মিলিত ব্যাটিং পারফরম্যান্সে সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিল ২-১ ব্যবধানে।
২ উইকেট নেওয়ার পর ৬৮ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা সৌম্য সরকার।
বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ায় জয়। ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোতে ২১৫ রান তাড়ায় জয়টিই কেবল এগিয়ে।
দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের চতুর্থ সিরিজ জয় এটি। তিনটি জয়ই এলো দেশের বাইরে।
এবারের জিম্বাবুয়ে সফরে একমাত্র টেস্ট, তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সবকটি জয়ের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতল বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৯৩/৫ (মারুমানি ২৭, মাধেভেরে ৫৪, চাকাভা ৪৮, রাজা ০, মায়ার্স ২৩, বার্ল ৩১*, জঙ্গুয়ে ১*; তাসকিন ২-০-২৮-০, সাইফ ৪-০-৫০-০, শরিফুল ৪-০-২৭-১, সাকিব ৪-০-২৪-১, নাসুম ৩-০-৩৭-০, সৌম্য ৩-০-১৯-২)।
বাংলাদেশ: ১৯.২ ওভারে ১৯৪/৫ (নাঈম ৩, সৌম্য ৬৮, সাকিব ২৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৪, আফিফ ১৪, শামীম ৩১*, সোহান ১*; রাজা ১-০-১৩-০, চাতারা ৪-০-২৭-০, মুজারাবানি ৪-০-২৭-২, মায়ার্স ৪-০-৪২-০, জঙ্গুয়ে ৩-০-৪২-২, মাসাকাদজা ৩.২-০-৩৭-১)।
বিএসডি/মাজিদ