আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে সামরিক বাসে হামলা চালিয়ে ১৪ সেনা সদস্য নিহতের প্রতিশোধে চালানো পাল্টা হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিবে সরকারি বাহিনী বুধবার (২০ অক্টোবর) এই হামলা চালায়। নিহতদের মধ্যে শিক্ষক ও শিশু শিক্ষার্থীসহ বেসামরিক মানুষও রয়েছেন।
বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দামেস্কে সরকারি বাহিনীর ওপর চালানো এই হামলাটি ছিল সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী।
সরকারি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনা সদস্যদের বহনকারী একটি বাস বুধবার সকালের দিকে দামেস্ক শহরের কেন্দ্রস্থলে হাফিজ আল আসাদ সেতুর কাছে পৌঁছানোর পর দু’টি সামরিক বাসে পৃথক দু’টি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ১৪ সরকারি সেনা।
রয়টার্স বলছে, এই হামলার প্রায় ঘণ্টাখানেক পরই সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিবের আরিহায় ব্যাপক হামলা করে দেশটির সরকারি বাহিনী। দেশটির এই অঞ্চলটি আসাদ সরকারের বিরোধীরা এখনও নিজেদের দখলে রেখেছে।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের নিয়ন্ত্রিত বাহিনীর চালানো এই হামলায় নিহত ১২ জনের মধ্যে চার শিশু ও এক শিক্ষক রয়েছেন। স্কুলে যাওয়ার পথে সরকারি বাহিনীর হামলায় তারা নিহত হন।
পর্যবেক্ষক গ্রুপ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, ২০২০ সালের মার্চের পর থেকে ইদলিবে এটিই সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলা। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, হামলায় কমপক্ষে আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন।
ইউনিসেফ বলছে, সিরিয়ায় হামলা ও সংঘর্ষে হতাহত শিশুদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় দশ বছরের যুদ্ধে কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়। সংস্থাটি বলছে, এই হিসাবও সঠিক নয়। কারণ অনেক মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট সেসময় জানান, ‘বিভিন্ন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আমরা ৩ লাখ ৫০ হাজার ২০৯ জনের মৃত্যুর একটি তালিকা তৈরি করেছি। ২০১১ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চের মধ্যে এসব মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। নিহত প্রতি ১৩ জনের মধ্যে একজন নারী অথবা শিশু।’