নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যখন যে সহায়তা চাইবে, তখন সেই সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন আমলারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বুধবার (০১ নভেম্বর) বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটে কার কী দায়িত্ব, তা নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর নির্বাহী পরিচালক বা উপযুক্ত কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, অর্থ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার) সচিব এবং বিভিন্ন বিভাগের প্রধানসহ ২৯ জন কর্মকর্তা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, সবাই আগে থেকেই অবগত রয়েছেন নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সংবিধানের যে সময়সীমা আছে, সেই সময়ে আয়োজনে বদ্ধ পরিকর। তাই এই নির্বাচনের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত বিভিন্ন দপ্তর, বিভাগ ও মন্ত্রণালয়; এদের প্রধানদের নিয়ে পর্যায়ক্রমে আমরা সভা করছি। গত পরশুদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আজকে সিভিল জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব, মহাপরিচালক, দপ্তর প্রধান ও প্রধান প্রকৌশলীদের সঙ্গে সভা করেছি।
তিনি বলেন, বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করা। এজন্য স্ব স্ব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের যা কিছু করণীয় রয়েছে তা অবহিত করা হয়। নতুন যে বিধি বিধান রয়েছে তার আলোকে কি করণীয় তা তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়। আজকের সভায় জনপ্রশাসন ও জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরের ২৯ জন কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্য রেখেছেন। নির্বাচনে যা যা করণীয় তারা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক বাস্তবায়ন করবেন বলে কমিশনকে আশ্বস্ত করেছেন। নির্বাচন কমিশনও তাদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। যাতে করে নির্বাচন সুন্দরভাবে আয়োজন হয়।
ইসি সচিব আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য, শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, নৌ পরিবহন, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, মাধ্যমিক শিক্ষা, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। যার যেটুকু করণীয় সেই বিষয়টুকু স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে করে নির্বাচনের সময় কোথাও কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কমিশন তাদের বক্তব্যও ধৈর্য সহকারে শুনেছেন। নির্বাচন কমিশন যে সহায়তা প্রত্যাশা করেন, তারা তাদের সেই সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
ইসি সচিব আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা কিছু গাইডলাইন দেখিয়েছিলাম সেই আলোকে আলোচনা হয়েছে, সবগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
পোস্টাল ব্যালটে ভোট হবে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আইনের আলোকে শুধু এবার না সবসময় ভোট দেওয়া যায় এবারও যাবে।
ঋণ খেলাপি প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, আইন যে সংশোধন হয়েছে নমিনেশন জমা দেওয়ার সর্বশেষ যে তারিখ আছে ওই দিনের আগের দিন পর্যন্ত যারা ঋণ খেলাপি তারা টাকা পয়সা জমা দেবেন। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় তারা যাতে রিটার্নিং অফিসারের কাছে হালনাগাদ তথ্য জমা দিতে পারেন।
দুর্গম এলাকায় ব্যালট পেপার পাঠানোর বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে জাহাংগীর আলম বলেন, আমি অনেক আগেই বলেছি, নির্বাচন কমিশনের বার্তা একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এর জন্য সংবিধান যাদের ওপরে যে দায়িত্ব দিয়েছে সেই দায়িত্ব তারা যাতে যথাযথভাবে পালন করবেন।
সংলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের বিনীতভাবে জানাতে চাই, ইসি সংলাপের আয়োজন করেননি। তবে নিবন্ধিত যে রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে সেই পার্টি থেকে দুই জন করে মনোনীত ব্যক্তিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক অথবা তাদের মনোনীত দুজন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কমিশন যে সব আয়োজন করছে সেই বিষয়ে অবহিতকরণ করা হবে।
৪৪টা রাজনৈতিক দলের মধ্য বিএনপিও আছে। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট কেউ পলাতক কেউ জেলে। বিএনপি যদি বলে তাদের কোনো প্রতিনিধিও নাই। তাহলে কি করা হবে। বিএনপি যদি সময় চায় তখন কি করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিএসডি/আরপি