নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরগুনার তালতলী উপজেলার ঝাড়াখালি এলাকায় দুইশ ফুটের একটি সেতুতে শিক্ষার্থীরা চলাচল অবস্থায় রোববার দুপুরে ভেঙে খালে পড়ে। এতে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায় ৫-৬ জন শিক্ষার্থী।
সেতুটি ভেঙে যাওয়াতে দুর্ভোগে পড়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থীসহ দুই ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার মানুষ। দ্রুত বিকল্প সেতু নির্মাণ না করলে বন্ধ হবে দুইটি স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া। স্থানীয়রা নতুন সেতু দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝাড়াখালী ও বড়বগী ইউনিয়নের বড়ভাইজোড়া এলাকার সংযোগ স্থলের সেতুটি ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে স্থানীয় প্রকৌশলী বিভাগ নির্মাণ করে। ওই দুই ইউনিয়নের ঝাড়াখালী ও বড়ভাইজোড়া এলাকার প্রায় ৫ হাজার গ্রামবাসীর চলাচল করে এবং এসইএসডিপি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঝাড়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া করার জন্য এ সেতু নির্মাণ করে।
সেতুটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় লোহার এঙ্গেলগুলো লোনা পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় জনসাধারণ ও স্কুল শিক্ষর্থীদের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস করতে যেতে পারছে না। ব্যাহত হচ্ছে তাদের লেখাপড়া।
তবে এই দুই ইউনিয়নের ৫ হাজার মানুষের চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সোমবারও এ ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে দেখা দেছে। এ ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করলে ঘটে যেতে পারে জীবননাশের মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তবে জোয়ারের পানিতে সেতুটি তলিয়ে থাকায় পারাপার করে যারা বিদ্যালয়ে আসত ওই সব শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার দুপুরের দিকে সরেজমিন দেখা যায়, সেতুটি ধসে খালের পানির মধ্যে পড়ে আছে। আর সেতুর দুই পাড়ে শিক্ষার্থীরা ও শিশুদের টিকা নেওয়ার জন্য পরাপারের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে নারী ও শিশুরা। কিন্তু নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীরা পারাপারের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই ওই ভাঙ্গা সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। ওই দুই ইউনিয়নের ৫ হাজার মানুষ ও শতাধিক শিক্ষার্থীদের স্কুলে-শহরে যাতায়াতের জন্য এই সেতুটিই একমাত্র মাধ্যম।
জান্নাতি, জাহিদুল, রাহাত ও সাইদুলসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলে- রোববার স্কুলে আসার সময় এ সেতুটি যখন পার হচ্ছিলাম হঠাৎ বিকট শব্দ পেয়ে দ্রুতই সেতু থেকে দৌড়ে একপাড়ে যাই। তবে আমাদের কিছু সহপাঠী অন্যপাড়ে দৌড়ে যায়। এরপরই চোখের সামনেই সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যায়। একটুর জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা করার দাবি জানায় তারা।
কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মোল্লা বলেন, স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আসার সময় সেতুটি ভেঙে পড়ে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এই এলাকার একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম এই সেতুটি। তাই দ্রুত নতুন একটি সেতু নির্মান করা একান্ত দরকার।
তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মদ আলী বলেন, সেতুটি অনেক আগে নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এছাড়াও লোনা পানিতে সেতুটির লোহার এঙ্গেলগুলো নষ্ট হওয়াতে ভেঙে গেছে। একটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ঢাকায় রিপোর্ট পাঠানো হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাওসার হোসেন বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়েছি। জরুরিভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।
বিএসডি/ এলএল