বর্তমান সময় ডেস্ক
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হত্যা মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। মনোনয়ন পেয়ে তিনি এলাকায় প্রচার-প্রচারণাও চালাচ্ছেন। তবে পুলিশ বলছে, তার গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় আসেনি।
তিনি হলেন উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও মৌটুপি গ্রামের মৃত আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে সাফায়েত উল্লাহ (৪৮)। এবারও তিনি পেয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর তিনি চেয়ারম্যান পদে তার মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আগামী ২৬ ডিসেম্বর ভৈরবে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর এলাকায় প্রচার-প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত।
সাদেকপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মানিক হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি সাফায়েত। ওই মামলায় গত ২৯ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন কিশোরগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক।
নিহত মানিক ভূইঁয়ার ছেলে ও মামলার বাদী মো. সুজন মিয়া বলেন, আমার বাবাও দলের একজন নেতা ছিলেন। তাকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ। দলের একজন নেতা হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে কেমন করে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক দিয়েছে তা আমি মানতে পারছি না। আদালত এখন তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। কিন্ত পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। সে প্রকাশ্যে এলাকায় প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে।
সাদেকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ফজলুল হক জানান, নিহত মানিক আমার চাচাত ভাই। মানিকও দলের একজন নেতা ছিল। তার খুনের মামলায় সাফায়েত প্রধান আসামি। অথচ দলের মনোনয়ন বোর্ড তাকে কী করে নৌকা প্রতীক দিল? আমিও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলাম। ডেলিগেট ভোটে আমি প্রথম হয়েছি কিন্ত আমি মনোনয়ন পেলাম না। খুনের আসামি পেল মনোনয়ন।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রলয় কুমার সাহা জানান, কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলে নির্বাচনে প্রার্থিতায় তার বাঁধা নেই। জেলে থেকেও সে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না।
এ ব্যাপারে কথা বলতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ’র ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। তার ফোনটি বন্ধ রয়েছে।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা (পিপিএম) জানান, আমি কয়েকদিন হলো ভৈরব থানায় যোগদান করেছি। সাফায়েত উল্লাহর গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়টি আমি জানি না। এ বিষয়ে খোঁজ নেব। আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় পৌঁছাতে কয়েক দিন সময় লাগে। থানায় পরোয়ানা এলে আমি আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর চতুর্থ ধাপের কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার ৭ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৬ ডিসেম্বর এ ধাপের নির্বাচন হওয়ায় কথা রয়েছে।
বিএসডি/ এসএ