জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হল ছেড়ে দিতে হলগুলোতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্টরা। তাদের এমন আহ্বানে সাড়া না দিয়ে হল থাকার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে প্রতিটি হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছাড়ার আহ্বান জানান প্রভোস্টরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা গেরুয়া এলাকায় নিরাপত্তা সংকটে রয়েছেন। এই মুহূর্তে হলই তাদের নিরাপদ স্থান। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রশাসনকে হল খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের প্রভোস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের জন্য অনুরোধ করেছি। তারা হল ছাড়তে রাজি হয়নি। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’
এর আগে গতকাল রোববার রাতে জাবি প্রশাসনেরে পক্ষ থেকে আজ সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নির্দেশ না মানলে তাদের প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। জাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কোনো কোনো আবাসিক হলে অবস্থান নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে ২২ তারিখ সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দিচ্ছে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে স্থানীয়রা। এ হামলায় অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী ও ৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন। এর মধ্যে অন্তত ১১ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের এমন সংঘর্ষে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।
শনিবার মেসগুলোতে অবস্থান করতে ‘নিরাপত্তার অভাব’ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তবে সরকারের নির্দেশনা ছাড়া হল খোলা সম্ভব নয় বলে দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই দিনই সবগুলো আবাসিক হলের তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করার পর ছেলেদের সবগুলো হলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করতে শুরু করেন। তবে মেয়েদের হলগুলোতে পুনরায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে জাবি প্রশাসন।