নিজস্ব প্রতিবেদক
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর হাটে মহিষের ব্যাপারির কাছে জোরপূর্বক চাঁদাবাজির অভিযোগে সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুবার রহমান (৫৩) এবং জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক আলমগীর হোসেনকে (২৭) আটক করে থানায় দিয়েছে সেনাবাহিনী। পরে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। গত মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে তাদের আটক করে থানায় দেয় সেনাবাহিনীর একটি দল। বুধবার গ্রেপ্তার দুই নেতাকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যাত্রাপুর হাটের ইজারা প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারা পান বিএনপি নেতা মাহাবুবার। ওই ইজারায় অংশীদারত্ব নেয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন নেতা। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের অফিস আদেশ না নিয়ে তারা হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে টাকা আদায় শুরু করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ফেনী থেকে আসা আনোয়ার হোসেন আজাদ নামে এক ব্যবসায়ী যাত্রাপুর হাটে ১৭টি মহিষ ক্রয় করেন। এ সময় বিএনপি নেতা মাহাবুবার ও বৈষম্যবিরোধী নেতা আলমগীর ব্যবসায়ী আজাদের কাছে খাজনা বাবদ ৮ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেন। কিন্তু বিনিময়ে তাকে কোনো বিক্রি চালান কপি সরবরাহ করেননি। চালান কপি ছাড়া পশুবাহী পরিবহন নিয়ে যেতে পথে সমস্যা হতে পারে জানালেও কোনো বৈধ কাগজপত্র দেননি বিএনপি নেতাসহ হাট সংশ্লিষ্টরা।
নিরুপায় হয়ে ওই ব্যবসায়ী বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানান। সেনাবাহিনীর একটি দল অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বিএনপি নেতা মাহাবুবার রহমান ও বৈষম্যবিরোধী নেতা আলমগীরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার আদালতে সোপর্দ করে।
এ ঘটনায় রাতেই কুড়িগ্রাম সদর থানায় যান বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একাধিক নেতা। তারা আটকদের ছাড়াতে জোর তদবির করেন। কিন্তু ততক্ষণে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় আসামিদের ছাড়তে অপারগতা প্রকাশ করে পুলিশ।
কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ বলেন, জোরপূর্বক অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আটকের পর বৈধ কোনো কাগজ দেখাতে না পারলেও পরে দ্রুততার সাথে উপজেলা প্রশাসন থেকে হাট ইজারাদার হিসেবে যাত্রাপুর হাটে খাস আদায়ের অনুমতিপত্র নেওয়া হয়েছে।