নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর লটমনি পাহাড়ি এলাকায় হাতি হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দুই জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে বাঁশখালী আমলি আদালতের বিচারক মো. মাইনুল ইসলাম এ নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গত ৩০ নভেম্বর বাঁশখালীতে লটমনি পাহাড়ি এলাকায় বৈদ্যুতিক শট সার্কিটের মাধ্যমে একটি হাতি হত্যা করা হয়। পরে আসামি কামাল ও নেজাম হাতিকে মাটিচাপা দেন। এই ঘটনায় বাঁশখালী সাধনপুরের বিট কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে বাঁশখালী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলার আসামি হলেন কামাল ও নেজাম। বাঁশখালীর আমলি আদালত প্রথম ও দ্বিতীয় আসামি বাবা কামাল ও ছেলে নেজাম হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তিনি আরও বলেন, আমার জানামতে হাতি হত্যার ঘটনায় এই প্রথম দেশের কোনো আসামি কারাগারে গেলেন।
সাধনপুরের বিট কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাধনপুর ইউনিয়নের লটমনি পাহাড়ি এলাকায় ধানক্ষেতে পাহারা বসিয়ে হাতি তাড়ানোর জন্য বৈদ্যুতিক শক ব্যবহার করা হয়। এতে জড়িয়ে ৩০ নভেম্বর হাতিটি মারা গেলে সেটি সবার অগোচরে মাটি চাপা দেওয়া হয়। পরে স্থানীয়রা সেটি দেখতে পেয়ে বাঁশখালী বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জানায়। সাফারি পার্ক ও বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের চিকিৎসক হাতির মরদেহ পরীক্ষা করলে বৈদ্যুতিক শকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
গত এক মাসে সাতকানিয়া ও বাঁশখালীতে বিভিন্ন কারণে ৩টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। শুধু বাঁশখালীতেই ১৯ দিনের ব্যবধানে ২টি হাতির মৃত্যু হয়। ৩০ নভেম্বর বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের লটমনি পাহাড়ি এলাকায় একটি বুনো হাতির মৃত্যু হয়েছিল। তখন বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছিলেন হাতিটিকে হত্যা করেছে।
এছাড়া ১২ নভেম্বর চট্টগ্রামের বাঁশখালীর চাম্বল এলাকায় একটি বুনো হাতির মৃত্যু হয়। এর আগে গত ৬ নভেম্বর সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের মইত্তাতলী বিলের ধানক্ষেতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি হাতির মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ধানক্ষেতের চারদিক কৃষকরা বিদ্যুতের তার রেখেছিলেন। ওই তারে জড়িয়ে মারা যায় হাতিটি।