গাজায় হামাসের রাজনৈতিক ও সামরিক শাখার প্রধান ইয়েহিয়া আল সিনওয়ারের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় সময় আজ রোববার এ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামাসও তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বিমান হামলায় কমপক্ষে চারজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। রাতভর বোমার শব্দ শোনা গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে। খবর রয়টার্সের।
ইয়েহিয়া আল সিনওয়ার ২০১৭ সাল থেকে হামাসের ওই শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তেল আবিব ও ইসরায়েলের দক্ষিণের শহর বিরসেবাতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁরা আশ্রয় ও চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন।
গত সোমবার সহিংসতা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ১৪৯ জন নিহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের মধ্যে ৪১ জন শিশু।
যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ এবং মিসরের দূতেরা পরিস্থিতি শান্ত করতে কাজ করছেন। তবে এ পর্যন্ত পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আজ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসবে। ইতিমধ্যে তেল আবিব পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সম্পর্কবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হাদি আমর।
হাদির সফর সম্পর্কে ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বলেছে, দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবেন তিনি। হাদি সেখানে ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
গতকাল শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অবস্থিত ১২ তলা একটি ভবন হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়। ওই ভবনে এপি ও আল–জাজিরার কার্যালয় ছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, আল জালা নামে ওই ভবন তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল। সেখানে হামাসের সামরিক বাহিনীর কার্যালয় রয়েছে। এ কারণে হামলার আগে তারা ওই ভবন থেকে মানুষকে সরে যেতে সতর্ক করেছিলেন। হামলার নিন্দা জানিয়েছে এপি।
হামলার পরে আজ সকালেই তেল আবিব ও ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলোয় রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা জানান, আরেকটি বিমান হামলায় গাজায় একজন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে।
কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিইয়েহ বলেছেন, ‘ইসরায়েলিরা ভেবেছিল তারা আল–আকসা মসজিদ ধ্বংস করে দিতে পারবে। ভেবেছিল, তারা আমাদের জনগণকে গৃহহীন করতে পারবে। আমি নেতানিয়াহুকে বলছি, আগুন নিয়ে খেলবেন না।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গতকাল জানায়, সোমবার থেকে এ পর্যন্ত হামাস, ইসলামিক জিহাদ ও অন্য দলগুলো ২ হাজার ৩০০ রকেট ছুড়েছে। তাদের দাবি, ইসরায়েল গাজায় এক হাজারের বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে। হামাস ও অন্যান্য সন্ত্রাসী দলকে লক্ষ্য করে তারা এই হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু গত সপ্তাহে। জেরুজালেমের আল-আকসায় পবিত্র জুমাতুল বিদা আদায়কে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বলা হচ্ছে, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঘটনা। বড় ধরনের সংঘর্ষের সূচনা হয় সোমবার পূর্ব জেরুজালেমে। সেই সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। সংঘর্ষ গাজার পর পশ্চিম তীরে ছড়িয়ে পড়েছে।