অর্থনীতি:
করোনাকালে দেশের ছয়টি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ১৯ মাসে ৩ হাজার ৩১৩ জন কর্মকর্তা চাকরি ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। আবার কাউকে ছাঁটাই, অপসারণ ও বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৯ আগস্ট পর্যন্ত ছয়টি বেসরকারি ব্যাংকে এ বিশেষ পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পরিদর্শনের তথ্য বলছে, করোনাকালে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ১৯ মাসে বেসরকারি ছয় ব্যাংকের ৩ হাজার ৩১৩ জন কর্মকর্তা চাকরি ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ হাজার ৭০ জন ‘স্বেচ্ছায়’ পদত্যাগ করেছেন। আর ২০১ কর্মকর্তাকে অপসারণ, ৩০ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও
১২ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
আলোচিত সময়ে, ইস্টার্ন ব্যাংকের ২০১, সিটি ব্যাংকের ১ হাজার ৯৮, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের ২৭৯, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৩৫, ব্র্যাক ব্যাংকের ১ হাজার ২১১ ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৪৬ কর্মকর্তা ‘স্বেচ্ছায়’ চাকরি ছেড়েছেন। এই সময়ে ডাচ্–বাংলার ১৪১ ও ব্র্যাক ব্যাংকের ৪৩ কর্মকর্তাকে অপসারণ করেছে। এত কর্মকর্তার ‘স্বেচ্ছায়’ পদত্যাগকে অস্বাভাবিক বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে ব্যাংকের নথিপত্রে ‘স্বেচ্ছায়’ পদত্যাগ উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশিরভাগ কর্মকর্তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়াও অনুসরণ করা হয়নি।
ছাঁটাই হওয়া কয়েকজন ব্যাংকার জানান, বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য পূরণ করতে না পারলে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। আবার সিনিয়র পদে নতুন কেউ যোগ দিলেও পুরনোদের ছাঁটাই করে নতুন লোকবল নেওয়া হয়। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে বরখাস্ত বা ছাঁটাই করা হয়। যে কারণে আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায় না, অন্য ব্যাংকে যোগদানের সুযোগও থাকে না। তাই সবাই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, কর্মীদের কারণেই করোনার মধ্যে ব্যাংকগুলো আগের চেয়ে বেশি মুনাফা করেছে। এরপরও অনেক ব্যাংক কোনো কারণ ছাড়াই কর্মী ছাঁটাই করেছে। এতে করে পুরো ব্যাংক খাতে কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা দূর করতে শিগগিরই নির্দেশনা দেওয়া হবে।
বিএসডি/আইপি