নিজস্ব প্রতিবেদক,
লক্ষ্মীপুরে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাহের হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ২০ আসামিকেই খালাস দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। জজ আদালতের সরকারি কৌঁশুলি (পিপি) জসিম উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রাতের অন্ধকারে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ সময় সাক্ষীরা অপরাধীদের দেখেনি। সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণে এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য বিজ্ঞ বিচারক তাদের খালাস প্রদান করেছেন। রায়ের সময় আদালতে সাত আসামি উপস্থিত ছিলেন।
তবে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে এ হত্যা মামলা নিয়ে। ৯ বছর ধরে চলমান এ মামলার আসামি ছিলেন ২০ জন। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত সবাইকে খালাস দিয়েছেন। তাহলে তাহেরকে হত্যা করলো কে?
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাহের দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সন্ত্রাস বাহিনীর প্রধান নূর হোসেন শামীমের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন। ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর দিবাগত রাতে শামীমের দত্তপাড়ার শ্রীরামপুর গ্রামের বাড়িতে তাহেরকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।
পরের দিন তাহেরের বাবা ফজলুল করিম বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামিদের মধ্যে দুইজন বিএনপি নেতা ও বাকিরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ছিলেন। ওই মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন বাহিনী প্রধান শামীম। ২০১৩ সালের ১৫ মে শামীম পার্শ্ববর্তী দিঘলী ইউনিয়নের আরেক সন্ত্রাসী বাবুল বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, হত্যা মামলায় পুলিশি তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সত্যতা মেলেনি। এতে মামলার পরবর্তী সময়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী আলাউদ্দিন আদালতের এজাহারভুক্ত আসামিদের নির্দোষ উপস্থাপন করে প্রতিবেদন জমা দেন। এতে বাদী ফজলুল করিম সন্তুষ্ট ছিলেন না।
তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেয়। তদন্ত শেষে তখন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) বসু দেব শীল এজাহারভুক্ত ১৭ আসামি ও আরও তিন আসামির নাম উল্লেখ করে ২০১৫ সালের ২২ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।
এর ভিত্তিতে দীর্ঘ শুনানি ও ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী আসামিরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) আদালতের বিচারক তাদের খালাস প্রদান করে।
বিএসডি/আইপি