শিক্ষার্থীদের জন্য বাসে হাফ ভাড়া নেওয়ার বিধান কার্যকর ও শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করা ঠিকানা পরিবহনের কর্মচারীকে গ্রেফতারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২১ নভেম্বর) সকাল থেকে প্রায় ৪ ঘণ্টা বকশীবাজারে সড়ক অবরোধ করার পর দুপুর ১টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যায়। অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে তারা ৯টি দাবি উত্থাপন করে। দাবি আদায় না হলেও সোমবারও সড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো-
১। শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে।
২। বাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হয়রানিমূলক আচরণ করা যাবে না।
৩। কলেজের সামনে সব বাস থামতে হবে।
৪। মহিলা সিট নিশ্চিত করতে হবে।
৫। সম্মানের সঙ্গে বাসে ওঠার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬। মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৭। ধর্ষণের হুমকি দেওয়া বাস কর্মচারীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৮। রায়েরবাগ, শনির আখড়া, কাজলা, সাইনবোর্ডসহ প্রত্যেক বাস স্টপে সব ধরনের বাস থামাতে হবে ও শিক্ষার্থীদের তুলতে হবে।
৯। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উগ্র ব্যবহার করা যাবে না।
এর আগে শনিবার রাজধানীর ঠিকানা বাসে অর্ধেক (হাফ) ভাড়া দেওয়ায় প্রকাশ্যে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার জের ও হাফ ভাড়ার দাবিতে সকাল থেকেই পুরান ঢাকার বকশী বাজারের সড়ক অবরোধ করে তারা।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে বদরুন্নেসা শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘আমার বাসা শনির আখড়া। এখান থেকে কলেজের (বকশী বাজার এলাকা) ভাড়া ১০ টাকা, প্রতিদিন ১০ টাকা দিয়েই যাচ্ছি। আজকে কলেজে যাওয়ার সময় ঠিকানা বাসে করে গিয়েছিলাম। তো আজকে হেলপারকে ২০ টাকার নোট দিলে সে ভাড়া রাখছে ১৫ টাকা। আমি তাকে ভালো করেই বলছিলাম আমার ১০ টাকা ফেরত দিতে, বাট সে দেয় তো নাই উল্টা বলে ‘দিমু না কী করবি কর’। এরপর চিল্লানোর পর সে বলে ‘গলা বড় করবি না, পাঁচ টাকা নে না হয় নাইমা যা’।
‘বাসের একটা মানুষও তাকে একটা কথাও বলে নাই। কেউ কিচ্ছু বলে নাই। ইভেন একটা পুলিশও ছিল, সেও কিছুই বলে নাই। এরপর নামার সময় পাঁচ টাকা হাতে ধরায় দিয়ে বলে “নে তোর টাকা, প্রতিদিনই তো আসবি একদিন ধইরা …. কোথাকার”। এই কথা যখন বলছে বাস অলরেডি রানিংয়ে, আমি তাকে কিছু বলার সু্যোগও পাইনি আর বাসের নম্বর নোট করারও সুযোগ পাইনি। জোরে বাস টেনে চলে গেছে।’
‘এখন আমার কথা হচ্ছে প্রতিদিন বাসের এমন ভোগান্তিতে পড়া লাগে। আমাদের ওঠায় না। আমাদের এখান থেকে প্রতিদিন অনেক মেয়ে যায় কলেজে। আমরা যদি এখন কিছু না বলি সামনে আরও প্রব্লেমে পড়তে হবে। ঠিকানা, মৌমিতা আমাদের কলেজের সামনে দিয়েই যায়। আমরা সবাই মিলে যদি একদিন রাস্তাটা ঠিকানা আর মৌমিতার জন্য বন্ধ করে দেই আমার মনে হয় এদের তেজ কমবে। আমি আশা করছি, এই কলেজের স্টুডেন্ট হয়ে আমার প্রতি এই আচরণের প্রতিবাদ তোমরা করবে।’
চকবাজার থানা পুলিশ জানায়, এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ বা মামলা হয়নি।