নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই আন্দোলনের আন্দোলনকারী ও বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলা পটুয়াখালীর কলাপাড়ার জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির গ্রামের বাড়ি দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এর প্রতিবাদে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় তার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে কাফি অন্তবর্তী সরকারকে ৭ দিনের আলটিমেটাম দেন। এই সময়ের মধ্যে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দুর্বৃত্তদের আটক করাসহ তার বাড়ি পুনর্নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘৩২ নম্বরের সামনে আমি বুলডোজারের ওপরে উঠে স্লোগান দিয়েছি, ছি ছি হাসিনা, লজ্জায় বাঁচি না। তখন আওয়ামী লীগের দোসররা ঘোষণা দিয়েছিল যে, যারা ৩২ পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হবে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রথম আক্রোশের শিকার আমি, এটাই প্রমাণ করে।’
কাফি বলেন, ‘এটা এই সরকারের ব্যর্থতা। আমি চাই এই সরকার আরও শক্তিশালী হোক। যদি এই সরকার ব্যর্থ হয় তাহলে তারা বলুক। তাহলে এই দেশের সাধারণ জনগণ বিপ্লবী সরকার গঠন করবে।’
এর আগে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লেখেন, ‘আমি এই দায়িত্বহীন সরকারকে (অন্তর্বর্তী) বিগ মেসেজ দেবো। সরকার মেসেজ সম্পূর্ণভাবে মানবে নতুবা আমি নিজেই বিকল্প হবো। আমিই বিপ্লবী সরকার হবো।’
দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কলাপাড়া সার্কেল) বিমল কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য কাজ শুরু করছি।’
কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী ফারুক বলেন, ‘ঘটনা শুনে সকালে বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের দোসররা রাতের অন্ধকারে জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বসতঘরটি পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
তবে এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনও নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আসামিদের শনাক্ত করতে প্রশাসন কাজ করছে। এ ছাড়াও অপারেশন ডেভিল হান্ট চলমান রয়েছে। আশা করছি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিদের শনাক্ত করা হবে।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রজপাড়া গ্রামের বাড়িতে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। পরে কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাফির বাবা এ বি এম হাবিবুর রহমান।