আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তানে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের জেরে ব্যাপক দুর্দশা চলছে দেশটির সংবাদমাধ্যম শিল্পে। চলতি বছর ১৫ আগস্ট কট্টরপন্থী তালেবানগোষ্ঠী দেশটির জাতীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর ৬ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছেন।
সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংস্থা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) ও আফগানিস্তানের সাংবাদিকদের সংগঠন আফগান ইন্ডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (এআইজেএ) পরিচালিত এক যৌথ সমীক্ষায় উঠে এসেছে এ তথ্য। জরিপে আরও জানা গেছে, সাংবাদিকদের চাকরি হারানোর পাশাপাশি ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে দেশটির ২৩১টি সংবাদমাধ্যমও।
মঙ্গলবার এসব তথ্য প্রকাশ করে এক যৌথ বিবৃতিতে আরএসএফ ও এআইজেএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, আফগানিস্তানে ক্ষমতার নাটকীয় পালাবদলের জেরেই এই বিপর্যয় নেমে এসেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম শিল্পে। গত প্রায় সাড়ে চার মাসে আফগানিস্তানের ৪০ শতাংশেরও বেশি সংবাদমাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে এবং চাকরি হারিয়েছেন ৬০ শতাংশেরও বেশি সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মী।
চাকরি হারানো সাংবাদিকদের মধ্যে নারী সাংবাদিকদের হার অনেক বেশি- শতকরা ৮০ ভাগ।
বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘আফগানিস্তানে চলতি বছর আগস্ট অব্দি সংবাদমাধ্যম ছিল মোট ৫৪৩টি। সেগুলোর মধ্যে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত টিকে ছিল মাত্র ৩১২টি; অর্থাৎ শতকরা হিসেবে, গত তিন মাসে দেশটিতে ৪৩ শতাংশ সংবাদমাধ্যম স্রেফ হারিয়ে গেছে।’
‘দেশটির রাজধানী কাবুলে ছিল অনেক সংবাদমাধ্যমের প্রধান অফিস। সেই কাবুলে ৫১ শতাংশ সংবাদমাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে। তালেবান শাসনের আগ পর্যন্ত কাবুলে ১৪৮টি সংবাদমাধ্যমের মূল দফতর ছিল, সেগুলোর মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র ৭২টি।’
আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তালেবান কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ যদিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে- নারীদের অধিকার, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের দায়মুক্তির মতো বিষয়গুলোতে তালেবান সরকার কখনো হস্তক্ষেপ করবে না, কিন্তু বাস্তবে সেই প্রতিশ্রুতির কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি।
‘বরং ক্ষমতায় আসার পর তালেবান সরকার যাদের প্রতি এখনও কঠোর নীতি বজায় রেখেছে- তাদের মধ্যে প্রথমেই আছেন নারীরা। তারপরে আছেন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা’- যৌথ বিবৃতিতে বলেছে আরএসএফ ও এআইজেএ।
সূত্র: এএনআই