নিজস্ব প্রতিবেদক
২০২১-২২ অর্থবছরে ৬০৮ কোটি দুই লাখ ৫৬ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)। বৃহস্পতিবার দুপুরে কেসিসির শহিদ আলতাফ মিলনায়তনে এ বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেসিসির অর্থ ও সংস্থাপন কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শেখ মো. গাউসুল আজম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেসিসির কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা।
বাজেটে নতুন কোনো করারোপ না করে বকেয়া পৌরকর আদায়, নবনির্মিত সব স্থাপনার ওপর প্রচলিত নিয়মে কর ধার্য এবং নিজস্ব আয়ের উৎস থেকে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান কেসিসি মেয়র।
প্রস্তাবিত এ বাজেটের রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৮ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ধরা হয়েছে ৪০৯ কোটি ১৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
গত অর্থবছরে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৪ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর আকার দাঁড়িয়েছে ৩৬৯ কোটি ১৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭৩ দশমিক ২০ শতাংশ।
বাজেটের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিকের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, কেসিসির নিয়মিত ও মাস্টার রোল কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ার কারণে কর্পোরেশনের ব্যয় প্রতি বছরই বাড়ছে। নিজস্ব সংস্থাপন ব্যয় মিটিয়ে এবং নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য রাজস্ব খাত থেকে এ বাজেটে ৫১ কোটি ৯৬ লাখ ৫০হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
রাজস্ব খাত থেকে উন্নয়ন খাতে ৩৮ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে এসব রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজস্ব তহবিল থেকে ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও মশক নিধনের জন্য কঞ্জারভেন্সি খাতে ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ঘোষিত বাজেট অনুযায়ী এ বছর উন্নয়ন বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। থোক বরাদ্দ থেকে পূর্তখাতে ২৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, ভেটেরিনারি খাতে ২৫ লাখ টাকা, জনস্বাস্থ্য খাতে ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা, নগরবাসীর জরুরি পানির চাহিদা মেটানোর জন্য গভীর ও অগভীর নলকূপকে সাবমারসিবল পাম্পে রূপান্তর করার জন্য ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এছাড়া জনস্বাস্থ্য খাতে ১০ কোটি ২ লাখ টাকা, কঞ্জারভেন্সি খাতে ১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ও ভেটেরিনারি খাতে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
২০২১-২২ অর্থ বছরে জাতীয় এডিপিতে কেসিসির তিনটি প্রকল্পে ২০১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা চলতি বছরে পাওয়া যাবে। এর মধ্যে কেসিসির গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত ও উন্নয়ন প্রকল্পটি ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০৭ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা। বর্তমান অর্থবছরে এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭০ কোটি টাকা।
ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পটির জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৮২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৬ হাজার টাকা। যা ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ অর্থ খুলনা মহানগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যয় করা হচ্ছে।
ঘোষিত বাজেটকে উন্নয়নমুখী উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এ বাজেটে নতুন কোনো করারোপ করা হয়নি। বকেয়া পৌরকর আদায়, নবনির্মিত সব স্থাপনার ওপর প্রচলিত নিয়মে কর ধার্য এবং নিজস্ব আয়ের উৎস সম্প্রসারণ (মার্কেট, দোকানঘর, আয়বর্ধক স্থাপনা নির্মাণ ও কর্পোরেশন সীমানা সম্প্রসারণের মাধ্যমে) আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
বিএসডি/এমএম