স্পোর্টস ডেস্ক
এক সময় মনে হতো, শচিন টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরির সেঞ্চুরির রেকর্ডটা যদি কেউ ছুঁতে পারেন তাহলে সেটা একমাত্র তিনিই। কিন্তু বিরাট কোহলির রানের সে ফল্গুধারা থেমেছে সেই ২০১৯ সালে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সে বছর নভেম্বরে করা ৭০তম শতকটাই হয়ে আছে তার শেষ। এরপর দিন আসে দিন যায়, ইনিংসের পর ইনিংস শেষ হয়, কিন্তু ভারতীয় এই ব্যাটারের অপেক্ষা যেন শেষ হয় না!
সে অপেক্ষার পালাটা মনে হচ্ছিল আজ শেষ হয়েই যাবে। কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের তোপ সামলে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকেও। ওপাশে একের পর এক সঙ্গীর আসা যাওয়ার মিছিল দেখছিলেন; তাতেও শঙ্কাও ছিল, সঙ্গীর অভাবে না আবার শেষমেশ সেঞ্চুরিটা অধরা থেকে যায়।
তবে আফসোসটাকে সে পর্যন্ত যেতেই দেননি ভারতের টেস্ট অধিনায়ক। শেষমেশ রাবাদার বলে আউট হয়েছেন সেঞ্চুরি থেকে ২১ রান দূরে। প্রায় আড়াই বছর দীর্ঘ সেঞ্চুরি খরাটা তাতে দীর্ঘায়িত হলো আরও একটু। ভারতের লড়াকু সংগ্রহের আশার তরীটাও ডুবেছে তার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গেই। সফরকারীরা গুটিয়ে গেছে ২২৩ রান তুলেই।
প্রথম দুই টেস্ট জিতেছে দুই দল। শেষ ম্যাচে জিতলেই সিরিজটা হয়ে যাবে জয়ী দলের। এমন সমীকরণের বাইরেও ভারতের সামনে ছিল ইতিহাসের হাতছানি। এমন এক ম্যাচ কোহলি শুরু করেন টস জিতে। প্রতিপক্ষকে বড় রানের পাহাড়ে চাপা দেওয়ার লক্ষ্য থেকেই যে ছিল এই সিদ্ধান্ত তা বলাই বাহুল্য।
তবে সে ভাবনাটা ভারতীয় ব্যাটাররা মাঠে প্রতিফলিত করতে পারলেন কই? ৩১ রান তুলতেই ওপেনার লোকেশ রাহুল ফেরেন, দুই রান তুলতে ফেরেন আরেক উদ্বোধনী ব্যাটার মায়াঙ্ক আগারওয়ালও। এরপর অভিজ্ঞ চেতেশ্বর পূজারা এবং অধিনায়ক বিরাট ইনিংসের হাল ধরেন। ৬২ রানের জুটিতে ভারতের বিপদটা প্রাথমিকভাবে সামাল দেন দুজনে।
তবে পূজারা ফিরতেই আবারও বিপদ নেমে আসে ভারতীয় ইনিংসে। অধিনায়ক কোহলি শুরু থেকেই ছিলেন সাবধানী, সঙ্গীর বিদায়ে সতর্কতাটা আরেকটু বাড়ে বৈকি। শেষ কিছু দিনে অফ স্টাম্পের বাইরের বলে তাড়া করার প্রবণতা চোখে পড়ার মতো বেড়েছিল, সেটার দেখাও মিলছিল না আজ। তাতেই মনে হচ্ছিল, আজ বোধ হয় ৭১তম সেঞ্চুরির অপেক্ষাটা শেষ হতে চলল।
অপরপ্রান্তে সঙ্গীদের চলমান আসা যাওয়ার মিছিল অবশ্য চোখরাঙানিও দিচ্ছিল। ৪৩ রান করে পূজারার বিদায়ের পর যে সঙ্গীদের সমর্থনটা পাচ্ছিলেন না তিনি! অজিঙ্কা রাহানের ৯ রানে বিদায়ের পর ঋষভ পান্ত থিতু হয়েও ফেরেন ২৭ রান করে। অশ্বিনও ফেরেন দুই অঙ্কে পা দেওয়ার আগে।
তবু কোহলি লড়ে যাচ্ছিলেন লেজের ব্যাটারদের নিয়ে। তারাও অবশ্য পর্যাপ্ত সমর্থনটা দিতে পারছিলেন না অধিনায়ককে। তাতেই বোধ হয় তার মনোযোগটা গেল নড়ে। শেষ কিছুদিনের ‘রোগ’ অফস্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়েই ইনিংস শেষ হলো তার। কাগিসো রাবাদার চতুর্থ শিকার বনে তিনি যখন ফিরছেন সেঞ্চুরি থেকে তখনো ২১ রান দূরে তিনি। দলের আশার তরীও ডুবেছে তখনই। তবু টেল এন্ডাররা লড়েছেন শেষতক, তাতে ১২টা বাড়তি রান যোগ হয়েছে দলের স্কোর বোর্ডে। ভারত শেষমেশ ইনিংস শেষ করেছে ২২৩ রানে।
বিএসডি/এসএ