নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ৯০ সেকেন্ড আগে পরীক্ষার খাতা নিয়ে নেওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে গেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েকজন শিক্ষার্থী।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বুধবার (২০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ওই শিক্ষার্থীরা খাতা আগে নেওয়ার জরিমানা হিসেবে— প্রত্যেককে ১৫ হাজার ৪০০ ডলার দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। আরও এক বছর পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিতে তাদের এ অর্থ খরচ হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কলেজের ভর্তি পরীক্ষা বিশ্বের অন্যতম কঠিন পরীক্ষার একটি। এতে টানা ৮ ঘণ্টা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর পরীক্ষা দিয়ে কলেজে ভর্তি হতে হয় শিক্ষার্থীদের। দেশটিতে এই পরীক্ষা ‘সুনেনাং’ নামে পরিচিত।
এই পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরি এমনকি ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বিষয়টিও নির্ধারণ করে থাকে। শিক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারেন— সেজন্য পরীক্ষার সময় দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া শেয়ার বাজারের কার্যক্রমও দেরিতে শুরু হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) অন্তত ৩৯ শিক্ষার্থী সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রথম বিষয়ের পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার আগেই রাজধানী সিউলের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রের বেল (ঘণ্টা) বেজে ওঠে।
কিছু শিক্ষার্থী সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে আপত্তি জানায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরীক্ষা কেন্দ্রের সুপারভাইজার তাদের খাতা নিয়ে নেয়। শিক্ষকরা পরবর্তীতে নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। পরে তারা মধ্যাহ্ন বিরতির সময় দেড় মিনিট বেশি সময় দেন। কিন্তু ওই সময় শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র খালি কলামগুলোতে দাগ দেওয়ার সুযোগ পান। পূর্বে দেওয়া উত্তর পরিবর্তন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি তাদের।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ইয়ুনহাপ নিউজ জানিয়েছে, এমন ঘটনার পর পরীক্ষার বাকি অংশে মনোযোগ দিতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। অনেকে তখন কেন্দ্র থেকে বের হয়ে বাড়ি চলে যান।
শিক্ষার্থীদের হয়ে যে আইনজীবী আদালতে লড়ছেন তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ক্ষমা চায়নি।
পরীক্ষার সময়ের বেল (ঘণ্টা) আগে বাজার ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ায় আগেও ঘটেছে এবং শিক্ষার্থীরাও আদালতের দারস্থ হয়েছেন। ২০২১ সালে একবার এমনটি হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে আদালতে গেলে, এ বছরের এপ্রিলে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার ২৫০ ডলার জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
বিএসডি / এলএম