নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে ১০ মণ ওজনের একটি ‘শাপলাপাতা’ মাছ। বিশালকৃতির এই মাছটি দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছে উৎসুক জনতা।
রোববার (২৯ আগস্ট) ভোর ৭টার দিকে জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা-যমুনা নদীর মোহনায় দৌলতদিয়ার ৭ নং ফেরিঘাট এলাকায় স্থানীয় জেলে বাবু সরদারের জালে মাছটি ধরা পড়ে।
পরে তিনি একটি ভ্যানে করে মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন একতা মৎস্য আড়তে নিয়ে আসেন। আড়তদার রেজাউলের আড়তে মাছটি বিক্রির জন্য তুললে রাজবাড়ীর মাছ ব্যাবসায়ী কুটি মন্ডল ৮ হাজার টাকা মণ দরে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে মাছটি ক্রয় করেন। পরে মাছটিকে আবারও ভ্যানে করে রাজবাড়ীর মাছ বাজারে আনা হয়।
স্থানীয় জেলে বাবু সরদার বলেন, আমরা সাধারণত ট্রলারে করে পদ্মায় বড় মাছ ধরতে যাই। কট সুতার জালে বড় মাছ ধরা পড়ে। কিন্তু হঠাৎ করে বিরল প্রজাতির এই মাছটি ধরা পড়লে খুশি হই। তবে জালে আটকানোর পড়ে মাছটি বেশি লাফালাফি করেনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে মাছটি ডাঙ্গায় তুলি।
একতা মৎস্য আড়তের মালিক রেজাউল ইসলাম (রাজ) বলেন, পদ্মা নদীতে প্রায় ১৫ বছর আগে একবার শাপলাপাতা মাছ পাওয়া গিয়েছিল। এটি সাধারণত মাটি ছুঁই ছুঁই করে পথ চলে। যে কারণে সহজে জালে ধরা পড়ে না। হয়তো পদ্মার তীব্র স্রোতের কারণে মাছটি মাটি থেকে ওপরের দিকে এসেছে।
আড়তদার কুটি মন্ডল বলেন, মাছটি বিলুপ্ত প্রজাতির। খেতে অনেক সুস্বাদু। যখন খবর পাই দৌলতদিয়াতে মাছটি ধরা পড়েছে তখন আমি ৮ হাজার টাকা মণ দরে ৮০ হাজার টাকাই মাছটি কিনি। এখন মাছটি লাভে বিক্রি করব।
স্থানীয় জেলে খির মোহন বিশ্বাস বলেন, মাছটির বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছর হবে। এটা সামুদ্রিক মাছ। ভেসে নদীতে চলে এসেছে। এই মাছ এর আগেও আমি দুটো কেটেছি। খেতে অনেক সুস্বাদু।
জানা গেছে, বিরল প্রজাতির এই সামুদ্রিক মাছটিকে স্থানীয়ভাবে হাঙ্গস মাছ বলা হলেও এর নাম রে ফিন ফিস বা স্টিং ফিস। অঞ্চলভেদে এই মাছটিকে শাপলাপাতা, পানপাতে, ঢাউস ও শাকুশ নামেও ডাকা হয়। মাছটি ১২ থেকে ১৩ প্রজাতির হয়ে থাকে। এটি মানবদেহের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এতে প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং মিনারেল থাকায় মাছটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং খেতেও খুব সুস্বাদু।
বিএসডি/আইপি