২০১৭–১৮ সালের দিকে একটি মুভির শুটিংয়ে ফেরদৌস ভাইকে সম্পর্কের কথা বলেছিলাম। কারণ, ভাই বললে মা বুঝবেন। সব শুনে ফেরদৌস ভাই বলেছিলেন, মাকে রাজি করানোর দায়িত্ব নেবেন। সেই সময়ে আমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে মা প্রায়ই কথা বলতেন। তখন মাকে বলে দিয়েছিলাম ওকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করব না। তখন ফেরদৌস ভাই আকার-ইঙ্গিতে মাকে বোঝাতেন ওর জন্য এই ধরনের ছেলে দরকার (হাসি)।
মাকে কীভাবে রাজি করালেন?
একসময় মা ছেলে ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সঙ্গে মিশে বুঝতে পারেন আমার সিদ্ধান্ত ঠিক। কিন্তু মাকে রাজি করাতে শেষের দিকে এক বছর লেগেছে।
আপনাদের প্রথম পরিচয় কীভাবে?
ফেসবুকের একটি গ্রুপে। তখন আমার বান্ধবী বলে, একটা ছেলে আছে কথা বল, ফ্রেন্ডশিপ কর। তখন আমি ভাবলাম আমার তো কথা বলার মানুষ নেই (হাসি)। আমরা আলাদা গ্রুপ খুলে মজা করতাম। আমরা ভালো বন্ধু হতে থাকি। এর মধ্যে একদিন সে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ফান করতে গিয়েই প্রেম হয়ে হয়ে যায়।
(হাসি) না না ভাই। আমাদের খুবই কম দেখা হয়েছে। শুধু ফোনে কথা হতো। আর প্রস্তাব পাওয়ার পরে কী বলব বুঝতে ছিলাম না। কিছুদিন সময় নিই। চিন্তা করে মনে হয়, তার সঙ্গে সারা জীবন কাটানো যায়। পরে হ্যাঁ বলে দিই।
কেন মনে হলো হ্যাঁ বলা যায়?
প্রথমত, সে ছিল বিনয়ী, লক্ষ্মী ছেলে। বোঝাপড়া ভালো ছিল। আমার কিছু মোমেন্টস ছিল আপসেট থাকতাম, লক্ষ করতাম সেই সময় সে আমাকে হাসানোর চেষ্টা করত, মন ভালো করে দিত। এ ছাড়া আমার কাজ নিয়ে খুবই সাপোর্ট দিত। তার সঙ্গে কথা বলতে আমার ভালো লাগতে শুরু করে। প্রথম আমরা গ্লোরিয়া জিনসে দেখা করি। সেদিন আমরা ম্যাচিং করে পোশাক পরেছিলাম।
আপনার হবু বর ব্যাংকার, আপনি ব্যস্ত থাকেন, পরিবার রাজি ছিল না, কীভাবে দেখা হতো?
আমাদের অনলাইনেই বেশি কথা হতো। এমনিতে এক-দুই মাসে এক বা দুবার দেখা হতো। শুক্রবার জিমে বা পারলারে যাওয়ার সময় বড়জোর ৩০ মিনিট কথা হতো। তখন আমরা নিকেতনে থাকতাম। সময় ঠিক করে বারান্দায় দাঁড়াতাম। ও নিচে দাঁড়িয়ে আমাকে দেখত। আমি ওপর থেকে ফোনে কথা বলতাম। স্কুল–কলেজের ছেলেমেয়েদের মতো আমি জানালার সামনে দাঁড়াতাম। ও আমাকে দেখত। একজন সেলিব্রিটি হিসেবে এভাবে দেখা করার কথা কেউ চিন্তাই করতে পারবে না। উইয়ার্ড সিচুয়েশন! আমার পারসোনাল লাইফটা ছিল এমন। দেখা করতেও আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।
প্রথম উপহারের কথা মনে আছে?
আমার এক জন্মদিনে কেক, গলার সুন্দর একটা সেট দিয়েছিল আর পিংক কালারের অনেকগুলো ফুল দিয়েছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই গিফটগুলো ১২টার সময় আমার এক ভাই নিয়ে এসেছিল। শুধু আমিই জানতাম সনি গিফটগুলো পাঠিয়েছে। তখন তো মায়ের কাছে প্রেমের বিষয়টা গোপন রাখতে হয়েছিল। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি ওকে লুকিয়ে উপহার দিতাম। আমি কাজ করলেও আমার পেমেন্ট কখনো আমি ধরি না। পেমেন্ট মায়ের হাতে দিতে বলি। কিন্তু প্রেমে পড়ার পর ওর যখন জন্মদিন আসত বা বিশেষ দিনে উপহার দিতাম, তখন আমার পেমেন্ট থেকে আগেই কিছু টাকা লুকিয়ে রেখে বাকি টাকা মাকে দিতাম। এভাবে টাকা জমিয়ে উপহার দিতাম।
বিয়ের সিদ্ধান্ত কবে নিয়েছিলেন?
আমি যখন রিলেশনে যাই, তখনই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। পরে ফ্যামিলিকে রাজি করাতে দেরি হয়। এখন ভালো সময় দেখে বিয়ে সেরে ফেলব।