আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উত্তর কোরিয়ায় প্রবল বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট বন্যায় হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। এতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন অঞ্চলের ফসলি জমি। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত পাঁচ হাজারের অধিক মানুষকে। রবিবার (৮ আগস্ট) দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম কেসিটিভি প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে খবরটি জানিয়েছে।
কেসিটিভির ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যায়, বন্যায় অনেক বাড়ির ছাদ পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক সেতুও। হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে ডুবে আছে। তাছাড়া অনেক নদীর বাঁধও ভেঙে গেছে। এমনকি যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সেবা এখন বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভয়াবহ এই বন্যার কবলে পড়েছে দেশটির সাউথ হ্যামগিউ প্রদেশ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত মানুষজনকে পর্যাপ্ত ত্রাণ ও অন্যান্য সহায়তা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।
উ. কোরিয়ার আবহাওয়া দফতরের সহকারী প্রধান রি ইয়ং ন্যাম গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, সবদিকে প্লাবিত হওয়ায় অবস্থা ভীষণই খারাপ। আবারও বৃষ্টি হলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে। আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত দেশটির উত্তর উপকূলে আরও বৃষ্টি হবে বলে এরই মধ্যে পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দরিদ্র কবলিত একনায়ক তান্ত্রিক সরকার গত জুনে দেশটিতে চরম খাদ্য সংকট তৈরি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছিল। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে ভয়াবহ রকমের বন্যা। দীর্ঘদিন ভঙ্গুর অবস্থায় থাকা কৃষিব্যবস্থা বন্যার কারণে আরও হুমকির মুখে পড়েছে। তাই স্বাস্থ্যকর খাবারের জোগান নিয়ে এখন উদ্বেগ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গেল মাসে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) একটি পূর্বাভাস দিয়েছিল। সেখানে বলা ছিল, উত্তর কোরিয়ায় চলতি বছর প্রায় ৮ লাখ ৬০ হাজার টন খাদ্যের সংকট রয়েছে। এর জেরে দেশটির বাসিন্দারা কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে পারেন বলেও সে সময় সতর্ক করেছিল সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, দুর্বল অবকাঠামো ও বহির্বিশ্বের সাথে বিচ্ছিন্ন থাকায় দেশটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সব সময় প্রকট হয়। মূলত বন উজাড়ের কারণে উত্তর কোরিয়ায় বন্যার ঝুঁকি দিনে দিনে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে গত বছর দেশটিতে টাইফুনের পর বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। যার রেশ এখনো কাটেনি।
বিএসডি/এমএম