আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল সংক্রমণ রোধে টিকা গ্রহণকারীদের চলাচলে শিথিলতা আনল মালয়েশিয়া। রবিবার (৮ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, প্রাণঘাতী ভাইরাসটির থাবায় বিশ্বজুড়ে জীবন-জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের জীবন-জীবিকায় ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সরকার তাই করছে।
এ দিকে করোনার সংক্রমণ রোধে দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তিদের রেস্তোরায় বসে খাওয়ার অনুমতি এবং আন্তঃজেলা ও আন্তঃরাজ্য চলাচলে শিথিল করা হয়েছে। এছাড়া তাদের মসজিদে নামাজ আদায়সহ সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শারীরিক ব্যায়াম এবং খেলাধুলা করার অনুমতিও দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ন্যাশনাল রিকভারি প্ল্যানের দ্বিতীয় ধাপে রাজ্যগুলোতে যে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- দূরপাল্লার বিবাহিত দম্পতিরা; যারা সম্পূর্ণরূপে টিকাপ্রাপ্ত, তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে দেখা করার জন্য আন্তঃজেলা এবং আন্তঃরাজ্য ভ্রমণ করতে পারবেন। এমনকি যে সব পিতামাতাকে টিকা দেওয়া হয়েছে তারা চাইলে তাদের ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তানদের সাথেও দেখা করতে জেলা ও রাজ্যগুলো অতিক্রম করতে পারবেন।
অপর দিকে দেশটির কুয়ালালামপুর, সেলাংগর, নেগরি সেমবিলান, কেদাহ, জোহর, মালাক্কা এবং পুত্রজায়া ব্যতীত বাকি সব রাজ্যকে ন্যাশনাল রিকভারি প্লানের দ্বিতীয় ধাপের লকডাউনের আওতায় রয়েছে।
মালয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা সিনোভ্যাক, ফাইজার, ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাওয়ার ১৪ দিন পর এই শিথিলতা প্রযোজ্য হবে। অন্য দিকে জনসন অ্যান্ড জনসন বা ক্যানসিনো ভ্যাকসিন গ্রহণের ২৮ দিন পর লোকজন এর আওতায় আসবে। এছাড়া এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে প্রবেশের সময় অবশ্যই তাদের ডিজিটাল কোভিড-১৯ টিকাকরণের সার্টিফিকেট এনফোর্সমেন্ট অফিসারদের দেখাতে হবে।
জীবনযাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য জাতীয় নিরাপত্তার বিশেষ কমিটি সার্বক্ষণিক কাজ করছে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন জেকেজেএভি বিশেষ কমিটিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা করছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের শেষ নাগাদ দেশে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে আসবে। অর্থনৈতিক খাতে নিষেধাজ্ঞা আরও শিথিল করার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে। এ বিষয়ে শীঘ্রই একটি ঘোষণা আসবে বলেও জানিয়েছেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।
এ দিকে দেশটির বৃহত্তর ক্লাং ভ্যা উপত্যকায় ভ্যাকসিন প্রয়োগে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে পুরো দেশের মানুষকে এর আওতায় আনা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
দেশটিতে করোনা রোধে এখন পর্যন্ত পুরো দেশ জুড়ে দুই কোটি ৪০ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮৮ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম ডোজের ৬৪.৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়া সম্পন্ন করেছেন ৩৬.৩ শতাংশ মানুষ।
অন্য দিকে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কেড়ে নিয়েছে ৩৬০ জনের প্রাণ। এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৭৪৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
উল্লেখ্য, একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৬৮৮ জন। এছাড়া মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ৬২ হাজার ৫৪০ জনে দাঁড়িয়েছে। আর প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৮ জন রোগী।
বিএসডি/এমএম