নিজস্ব প্রতিবেদক,
এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ আহরণের সময়সীমা বৃদ্ধির দাবি জেলেদের। কেচকি মাছ আহরণ নিয়ে বিপাকে কাপ্তাই হ্রদের জেলেরা। প্রতি বছর এই সময় কাপ্তাই হ্রদ পানিতে ভরপুর হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর হ্রদে এখনো পর্যাপ্ত পানি না হওয়াতে হ্রদে মাছ আহরণ আরও এক মাস বৃদ্ধি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিত আবেদন দিয়েছেন কেচকি জাল সমিতি। বিষয়টি সদয় অবগতির জন্য প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও ব্যবস্থাপক,মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ আরও অনেককে লিখিত ভাবে দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে।
কাপ্তাই হ্রদের জেলে ও কেচকি জাল সমিতির সভাপতি উপসেন দাশ বলেন, হ্রদ কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে জেলেদের উপর যে নতুন নিয়ম আরোপ করতে যাচ্ছেন তাতে আমরা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারবো না। তার কারণ হলো আড়াই হাজার ফুট বাই ৭০ ফুট গভীরতায় হ্রদে মাছ পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে আর ৭শ ফুট বাই ৬ ফুট গভীরতায় মাছ পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। হ্রদ বেষ্টিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে কারনে এই নতুন নিয়ম করতে যাচ্ছে সেটা হলো তারা মনে করে কেচকি জাল দিয়ে জেলেরা হ্রদের সব মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা।
তিনি আর বলেন, নতুন নিয়ম যদি চালু করা হয় তাহলে এ বছর কোন জেলেই হ্রদে মাছ আহরণে নামবেন না। হ্রদের উপর নির্ভরশীল জেলেরা প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। তার পরও নতুন নিয়মে তারা হ্রদে মাছ আহরণে যাবে না। কোভিড-১৯ সংক্রমণে কাপ্তাই হ্রদের জেলেরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তার মধ্যে আবার নতুন দিকনির্দেশনা। জেলেদের পক্ষ হতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন বিষয়টি বিবেচনা পূর্বক প্রত্যাহার করা হউক।
জেলে কালিপদ দাশ বলেন, হ্রদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ বছর পরে যদি কেচকি জাল নিয়ে নতুন নিয়ম কানুন বেধে দেন তাহলে আমরা জেলেরা বাঁচব কিভাবে। গভীরতা ৭০ফুট এবং লম্বা ২২শ ফুট জাল দিয়ে মাছ ধরা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ৬ ফুট গভীরতা এবং ৭শ ফুট লম্বা জাল দিয়ে তো মোটেই মাছ ধরা সম্ভব না। রাঙামাটি জেলায় প্রায় ২-৩ হাজার লেজে রয়েছে সবাই হ্রদের মাছ আহরণের উপর নির্ভরশীল। আর আমরা যারা কেচকি জাল দিয়ে মাছ আহরণ করি সবার বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। অপর দিকে অনেক জেলের সওদাগরের কাছ থেকে মাছের উপর অগ্রিম অর্থ নেওয়া আছে যার পরিমাণ ২ লাখ থেকে শুরু করে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। গত বছর এই সময়ে হ্রদে প্রচুর পানি ছিল কম বেশী মাছ আহরণ করা গেছে। কিন্তু এ বছর এখনও হ্রদে নামতে পারিনি আমরা। হ্রদে পানি না থাকায় মাছ আহরণ আরও এক মাস পিছিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন করেছি।
মৎস্য বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.আজহার আলী বলেন, কাপ্তাই হ্রদ দখল করে আছে কিছু মাছ ব্যবসায়ী। জেলেরা হলো বলির পাঠা। আর যে সকল জেলে হ্রদে মাছ আহরণ করতে আসে তারা সবাই রাঙামাটির বাহিরের লোক। তাদের জন্য কার্ড দেওয়া হচ্ছে কেন তারা কার্ড পাবে।
তিনি বলেন, কেচকি জাল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তার পরও বিশেষ বিবেচনায় শর্ত দিয়ে কেচকি জাল অনুমতি দিয়েছেন। হ্রদ নিয়ে হাই প্রোফাইল ১৫-২০ আন্তঃ মিটিং করা হয়েছে। ওই মিটিং এ এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদ বাঁচানো সকলের দায়িত্ব। কেচকি জাল দিয়ে মাছ আহরণ করতে গিয়ে ৩০-৩৫ ধরনের কার্প প্রজাতিয় মাছ ধরা পড়ে। কেচকি জাল নিয়ে ইনটেরেস্ট ব্যবসায়ীদের এবং বিএফডিসির।
বিএসডি/আইপি