নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতিসংঘ শান্তি মিশনে থাকাকালীন একজন নারী পুলিশ ইন্সপেক্টরকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার (এসপি) মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়েছে। ওই নারী পুলিশ ইন্সপেক্টর বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ মামলাটি হয়েছে।
মামলার পর অভিযোগকারীর জবানবন্দি নেয়া হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ১ ধারায় মামলাটি করা হয়। অভিযুক্ত পুলিশ সুপার শান্তি মিশনে পুলিশের কন্টিনজেন্টের কমান্ডার ছিলেন। সেখানে অবস্থানের সময় এ ঘটনা ঘটে। ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা এ তথ্য নিশ্চিত রেছেন।
মামলায় ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, দুই বছর আগে তিনি সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তখন সুদানে কর্মরত ছিলেন এসপি মোক্তার। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর এসপি মোক্তার হোসেন পেটের সমস্যার কথা বলে ওই পুলিশ সুপার নারী পুলিশ ইন্সপেক্টরকে দুপুরে রান্না করে খাওয়ানোর কথা বলেন। সেখানে যাওয়ার পর তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সুদান ও বাংলাদেশে তাঁকে আরও কয়েকবার ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন।
‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার ও উন্নয়নে মাঠ পর্যায়ের মতামত’ শিরোনামে সম্প্রতি জরিপটি চালিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন, পার্বত্য অঞ্চল ও বিশেষায়িত ইউনিটের কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পদবির ৪৪১ জন পুলিশ সদস্য এই জরিপে অংশ নেন। জরিপে একাধিক প্রশ্নের মধ্যে একটি ছিল: কর্মক্ষেত্রে নারী পুলিশ সদস্য যৌন হয়রানির সম্মুখীন হন কি?
জরিপে অংশ নেয়া নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ৩৪৬ জন এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৩৮ জন অর্থাৎ উত্তরদাতাদের প্রায় ৪০ শতাংশ জানিয়েছেন, নারী সদস্যরা হয়রানির শিকার হন। এরপর জরিপে অংশ নেয়া নারীদের মধ্য থেকে ১২ জনের কাছে আলাদাভাবে জানতে চাওয়া হয় তাঁরা যৌন হয়রানির শিকার হন কিনা। তখন তাঁদের মধ্যে ৮ জন হাঁ সূচক জবাব দেন।
এর আগে ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের (সিএইচআরআই) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, বাংলাদেশে পুলিশে কর্মরত নারী কনস্টেবলদের ১০ ভাগের বেশি সদস্য যৌন হয়রানির শিকার হন। উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শক পদের নারী কর্মকর্তাদের শতকরা ৩ ভাগ এ ধরনের ঘটনার শিকার হন। এ ছাড়া ক্যাডার পর্যায়ের নারী পুলিশ সদস্যরাও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বাইরে নন। তবে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক তখন বলেছিলেন, এ ধরনের তথ্য একেবারে ভিত্তিহীন।
১৯৭৪ সালে মাত্র ১৪ নারী কনস্টেবল ও উপপরিদর্শক (এসআই) নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশে নারী পুলিশের সদস্যদের যাত্রা শুরু। চলতি বছর পর্যন্ত বাহিনীতে নারী সদস্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১৬৩ জন, যা পুলিশবাহিনীর মোট সদস্যের ৭ দশমিক ৯২ শতাংশ।
বিএসডি/এমএম