নিজস্ব প্রতিবেদক,
কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদীর ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। এ পকল্প বাস্তবায়ন হলে নদীভাঙন থেকে রক্ষা পাবে তিন উপজেলায় নদী অববাহিকার হাজার হাজার ঘর-বাড়ি, ফসলি জমিসহ সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা। এতে খুশি নদীর দুই পাড়ের মানুষ। চলছে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ধলডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ঢুকে নাগেশ্বরী উপজেলার ভেতর দিয়ে ৬৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সদর উপজেলার যাত্রাপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে দুধকুমার। খরস্রোতা এ নদীর ভাঙনে প্রতিবছর দুই পাড়ের হাজার হাজার বসত-বাড়ি, আবাদি জমি ও স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে এ নদীর ভাঙন রোধে কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়নি। দুধকুমার নদীর ব্যবস্থাপনায় গত ১০ আগস্ট ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক।
নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের দুধকুমার পাড়ের বাসিন্দা খয়বর আলী বলেছেন, ‘এই দুধকুমার নদী দুই বার আমার বাড়ি ভেঙেছে। আবাদি জমি নদীতে পড়ে আছে। বর্তমানে বাড়িও ভাঙনের কবলে পড়েছে। এখন আর নদীভাঙন হবে না, এর চেয়ে আনন্দের সংবাদ আর নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করছি।’
নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মইনুল ইসলাম লাল বলেছেন, ‘এবারই প্রথম দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই নদীর দুই পাড়ের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় আমরা নদীপাড়ের মানুষরা আনন্দ মিছিল করছি। মিষ্টি বিতরণ করছি।’
কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মন্জু বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামের মানুষকে অত্যন্ত ভালোবাসেন বলেই একনেক বৈঠকে দুধকুমার নদীর ভাঙন রোধে প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা জেলাবাসীর পক্ষ থেকে, জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেছেন, ‘এ নদীতে বর্ষা মৌসুমে প্রচুর পানি আসে এবং হাজার হাজার ঘর-বাড়ি, স্থাপনা, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ প্রকল্পের আওতায় ২৫ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার এলাকায় কাজ করা হবে। এর ফলে নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলা শহর, সোনাহাট স্থলবন্দর, হাট-বাজার, বিভিন্ন স্থাপনা, ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি রক্ষা পাবে। কুড়িগ্রামে এ পর্যন্ত নদীভাঙন রোধে যত প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে, এটিই সবচেয়ে বড় প্রকল্প। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
বিএসডি/আইপি