নিজস্ব প্রতিবেদক,
দুর্দিনে বন্ধুত্বের পরিচয় উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশের দুর্দিনে বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলব, ভারতবাসীর প্রতি আমাদের মমত্ববোধ রয়েছে।
সোমবার (১৬ আগস্ট) রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারত গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। এ চেতনা যুদ্ধজয়ে প্রেরণা জুগিয়েছে। ভারতের এগিয়ে যাওয়া অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। ভারতের এগিয়ে যাওয়া সমস্ত পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার।
সভাপতিত্ব করেন সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি।
তিনি বলেন, ভারতবর্ষে আধুনিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস- ঔপনিবেশিক শাসন থেকে রাজনৈতিক মুক্তি আন্দোলনের ইতিহাস- এ সব কিছুতে উপমহাদেশের সব মানুষ অবদান রেখেছিলেন। অবদান রেখেছিলেন এ চট্টগ্রামেরই বীর স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষ মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, যাত্রামোহন সেনগুপ্ত, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত- যারা ব্রিটিশ ঔপনিবেশের হাত থেকে ভারতবাসীকে মুক্ত করে। আমি এ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করি। তাদের জন্মভূমি ও কর্মভূমি- এ দুটোতে আমি যেতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।
আমি আরও স্মরণ করছি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের। আমি গর্বিত মনে করছি যে, যুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল প্রতিবেশী ভারতের জনগণই। বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জোরালো কূটনৈতিক প্রচারণা, স্বীকৃতি প্রদান এবং নানা দেশের সমর্থন আদায়ের প্রয়াস অব্যাহত ছিল। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাবাহিনী একসঙ্গে প্রাণ বিসর্জন করে একটি স্থায়ী বন্ধন তৈরি করে গেছেন। আশাকরি, দুই মিত্রবাহিনীর এ স্থায়ী বন্ধন ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে। কোনো অপশক্তি এ শাশ্বত বন্ধন ছিন্ন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ ১৯৭১ থেকে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। দুই দেশের অর্থনীতি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশী নীতি হচ্ছে ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’। অর্থাৎ একসঙ্গে সবার উন্নতি এ লক্ষ্য অনুসরণ। ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। আমাদের কাছে প্রতিবেশী প্রথমে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে বাংলাদেশ সবার আগে।
তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি লাভ করেছে। এ দেশের উন্নতি এখন বিশ্বের উদাহরণ। বাংলাদেশের উন্নতির পেছনে মূল চালিকাশক্তি হলো তার পরিশ্রমী জনগণ। বাংলাদেশের এ অগ্রগতিতে আমরা, ভারতবাসী আনন্দিত। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নে ভারত সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে- এটা আমার বিশ্বাস।
রুনা ব্যানার্জির সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ জ্ঞানেশ ত্রিপাটি, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া চট্টগ্রামের সিইও সুব্রত বিশ্বাস। কবিতা আবৃত্তি করেন রাশেদ হাসান।
বিএসডি/আইপি