আন্তর্জাতিক ডেস্ক
একে একে গোটা আফগানিস্তান দখলে নেওয়ার পর সর্বত্রই এখন বন্দুকধারী তালেবান যোদ্ধাদের দাপট। ক্ষমতা পরিবর্তনের ফলে উদ্বিগ্ন পুরো বিশ্ব। এতে ‘গ্লোবাল জেহাদ’ এর পালে হাওয়া লেগেছে বলে মত বিশ্লেষকদের। আর ‘খিলাফত’ গড়ার লড়াইয়ে যে জেহাদিদের ক্রস হেয়ারে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর তা বলাই বাহুল্য। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় লড়াই চালাতে তালেবানের সাহায্য চেয়েছে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন।
এক অডিয়ো বার্তায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি এই সাহায্য চেয়েছে। শুক্রবার তালেবানদের আফগানিস্তান জয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ওই অডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেছে সংগঠনটির প্রধান সৈয়দ সালাউদ্দিন।
অডিয়ো বার্তায় সেখানে বলা হয়েছে, ‘আল্লার কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন আফগানিস্তানের ইসলামি আমিরশাহীকে আরও শক্তিশালী করে তোলেন। তাহলে তারা কাশ্মীরে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করতে পারবে।’
ওই অডিয়ো বার্তা প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি কাবুলে হাক্কানি নেটওয়ার্ক, লস্কর ও জইশ জঙ্গিদের দাপট দেখা গেছে। এমনকি একাধিক স্থানে রীতিমতো নাকা চেকিংও শুরু করেছে আল কায়দা। বিশেষ করে হাক্কানি নেটওয়ার্কের কার্যকলাপ নিয়ে সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের বৈঠকে সরব হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। সাউথ ব্লকের ধারণা, হাক্কানি নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা করবে পাকিস্তান।
তবে সম্প্রতি তালেবান জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের সমস্যা দ্বিপাক্ষিক বিষয়। আফগানিস্তানের মসনদ দখলের পরে ওই মৌলবাদী সংগঠনের দাবি, কাশ্মীরে নজর নেই তাদের। তবে তালেবান যে মুহূর্তে অবস্থান পালটে ভারতবিরোধী শক্তিগুলোর সাথে হাত মেলবে না তারও নিশ্চয়তা নেই।
জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাইয়ে উত্তর চিনের তিয়ানজিন শহরে তালেবান নেতা আবদুল ঘানি বরাদর ও মুখপাত্র সুহেল শাহিনের নেতৃত্বে আসা প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করেন চিনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বহুদিন ধরেই তালিবানের সাথে গোপনে আলোচনা চালাচ্ছিল বেইজিং। আমেরিকা ও ভারতকে বিপাকে ফেলতে পাকিস্তানের সাথে ষড়যন্ত্র করে জেহাদিদের অস্ত্র ও সরঞ্জাম দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে শি জিনপিং প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
এ দিকে, তালেবানের আফগানিস্তান দখলের দায় সরাসরি আমেরিকার ঘাড়ে চাপিয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (ISIS)। সংগঠনটির দাবি, আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার করে আফগানিস্তানকে তালেবানের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, কাবুলে তালেবানের প্রবেশের সময়ে মার্কিন সেনা ও তালেবানের মধ্যে কীভাবে সমন্বয় রক্ষা করা হচ্ছে তা দেখা গেছে। কীভাবে দুই পক্ষের মধ্যে বিশ্বাসের ফলে হাজার হাজার ধর্মযোদ্ধা ও গুপ্তচরকে সে দেশ থেকে সরানো হলো তা-ও দেখা গিয়েছে। ফলে আইএসের দাবি, তালেবান ‘ভুয়া জেহাদি’। তারা ‘প্রকৃত জেহাদ’-এর পথে হাঁটেনি। আফগানিস্তানে ‘প্রকৃত শরিয়ত শাসন’ কার্যকর করার ক্ষমতাও তাদের আছে কি না তাতেও সন্দেহ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনটি।
বিএসডি/এমএম