লাইফস্টাইল ডেস্ক,
ভোলার ঐতিহ্যবাহী খাবার মহিষের দই। স্থানীয়ভাবে এটি ‘ভৈষা দই’ নামে পরিচিত। উৎসব-পার্বণে এর চাহিদা বাড়ে। প্রায় ২শ’ বছর আগে ভোলার স্থানীয়রা মহিষের দুধ থেকে কাঁচা দধি উৎপাদন শুরু করে। যা ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু হয়ে বর্তমান সময়েও সমান জনপ্রিয়।
দ্বীপ জেলা ভোলার ব্রান্ড হিসেবে পরিচিত মহিষের দুধের কাঁচা দধি। প্রায় দুই’শ বছরের ঐতিহ্য বহন করা দধি এখানকার অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম প্রধান উপাদান। এ টক দধি গুড়, মিষ্টি অথবা চিনি দিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়া মুড়ি, চিড়া ও খৈ দিয়েও খাওয়া যায়।
ভোলায় খাবার তালিকায় জনপ্রিয় এই খাদ্যটি না থাকলে সামাজিকতা পরিপূর্ণ হয়ে উঠে না। এছাড়া খাবার হজমে কাঁচা দুধের দধি বাড়তি সহায়তা করায় এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। অনেকেই কুটুম বাড়িসহ দূর-দূরান্তের পছন্দের মানুষদের জন্য দধি কিনে নিয়ে যান। এছাড়া দেশের বাইরেও প্রিয়জনদের কাছে দধি পাঠান অনেকে।
মহিষের কাঁচা দুধের ‘টক দই’ তৈরি পদ্ধতি
এ দই বা দধি তৈরিতে কোনো প্রকার বীজ বা অন্য উপাদানের প্রয়োজন হয় না। শুধু কাঁচা দুধটা টালি (মাটির বিশেষ পাত্র) তে বসিয়ে দিলেই ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টার মধ্যে দধি হয়ে যায়। জমাটবাধা দধি দেখতে অনেকটা পনিরের মতো মনে হবে। তাই স্বাদে গুণে অনন্য এ খাবারটি বিভিন্ন উৎসব যেমন ঈদ-পূজা, বিয়ে, জন্মদিন, আকিকাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যাপক কদর রয়েছে।
সম্পূর্ণ দুধের বাজারের ওপর নির্ভর করে দধির বাজার। দুধের দাম কমলে দধিরও মূল্যে কমে। জেলা সদরসহ সকল উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে দধির দোকান থাকবেই। গ্রামাঞ্চলে হাটের দিনে দধির টালির পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হয় মহিষের দুধের দধি। সারা দেশের মধ্যে শুধু এ অঞ্চলেই এক সময় মহিষের দুধের দধির কদর ছিল। অন্যান্য জেলার মানুষ প্রথম প্রথম এর স্বাদ বোঝে না। বার বার যারা এটা খেয়েছে তারাই বোঝে এ দধি কতটা মজাদার। সেই প্রাচীন আমল থেকেই দধির প্রচলন জেলায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে আরো।