জ্যৈষ্ঠ রাজনৈতিক প্রতিবেদক
করোনাসহ নানা ইস্যুতে বিএনপিকে নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। এরই মধ্যে দল গোছানোর ছুতোয় আপাতত ‘শক্ত’ আন্দোলনে যেতে চাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। এ নিয়ে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে দলের তৃণমূলে।
বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে এখনই সব শক্তি ক্ষয় করতে চান না বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
এদিকে দেড় বছর ধরে মহামারি চলছে, থেমে থেমে চলা লকডাউন সবেমাত্র শেষ হলো। এ কারণে তৃণমূল নেতাকর্মীরা রাজপথে আন্দোলনের জন্য মুখিয়ে থাকলেও বিএনপি আপাতত সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ আর মানববন্ধনেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায়। আপাতত রাজপথে জোরালো কোনো কর্মসূচিও নেই তাদের।
দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, বিএনপির আন্দোলনের মূল হাতিয়ার যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। এসব অঙ্গ-সংগঠনের কমিটি এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এদিকে ঢাকা মহানগর বিএনপিও প্রস্তুত নয়। এ চার সংগঠন রাজপথে না থাকলে আন্দোলনে গতি আসবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আন্দোলন চাঙ্গা করতে দ্রুত সব অঙ্গ-সংগঠনগুলোর কমিটি দিতে হবে। এছাড়া বিএনপির সব সাংগঠনিক জেলাগুলোও গুছিয়ে ফেলার প্রয়োজন। তবে এসব বিষয়ে বিএনপির ধীর গতিই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আপাতত ‘শক্ত’ কোনো কর্মসূচিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া আইনি লড়াই চালানোর পাশাপাশি রাজপথে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কর্মসূচিতেই থাকার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে দল গোছানোরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
তবে বিএনপির বরাবরের মতো কচ্ছপ গতিতে চলার নীতিতে চরম ক্ষুব্ধ হচ্ছেন মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়ার জন্য রাজপথের ‘শক্ত’ কর্মসূচি না থাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছে তৃণমূল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও বদল চাচ্ছেন তারা।
এদিকে আন্দোলনে বিএনপির সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দলের ভেতরের নেতাকর্মীরাই। এ প্রসঙ্গে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আমাদের ‘ডু অর ডাই’ কর্মসূচিতে যেতে হবে। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। এতে কেন্দ্রের গাফিলতিই প্রকাশ্যে আসছে।
তিনি আরো বলেন, নিজেদের কচ্ছপের মতো লাগছে। আর যোগ্য লোকদের হাতে নেতৃত্ব নেই বলে আজ করুণ বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছে দল। এর ভবিষ্যৎ খুবই ভয়াবহ।
বিএসডি/এমএম